শীতে রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি ও করণীয় কি


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৩১, ২০২২, ৪:৪৫ অপরাহ্ণ /
শীতে রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি ও করণীয় কি

শীতের সময় প্রতিটি মানুষের অসুখবিসুখ বাড়েই না; বরং কিছু কিছু রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। তাই তীব্র শীত আসার আগেই কিছু রোগের প্রকোপ ঠেকাতে সতর্ক থাকা ভালো।

শীতের সময় কমন অসুখ হলো সর্দিজ্বর, কাশি। এ ছাড়া নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমা, অ্যালার্জি, চোখ ওঠা, ডায়রিয়া, খুশকি, খোসপাঁচড়া বা চর্মরোগ প্রভৃতিরও প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। তবে শীতের এ সময় কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকলে এসব রোগের জটিলতা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

সর্দি-কাশি-জ্বর সর্দি-কাশি-জ্বর বা কমন কোল্ড শীতের সময়কার একটি সাধারণ রোগ। সর্দিজ্বর দেহের শ্বাসনালির ভাইরাসজনিত এক ধরনের সংক্রমণ। ঋতু পরিবর্তনের সময় এ রোগ বেশি দেখা যায়। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা যাদের কম তাদের এ রোগ বেশি হয়। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এসব রোগ একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়ায়। সর্দিজ্বর হলে প্রথমে নাকে ও গলায় অস্বস্তি লাগে, হাঁচি হয়, নাক দিয়ে অনবরত পানি ঝরতে থাকে। নাক বন্ধও থাকতে পারে। মাথাব্যথা, মাথা ভারী বোধ হওয়া, শরীরে ব্যথা, জ্বর, গলাব্যথা প্রভৃতি উপসর্গও দেখা যায়।

এছাড়া শীতকালে দিন ছোট এবং ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে অনেকে ব্যায়াম করতে অনিচ্ছুক বা সময় পায় না। এ জন্য শরীরের ফিটনেস এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। ফলে বিভিন্ন রোগ সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধ সর্বোত্তম উপায়। এজন্য শীত আসার আগেই সতর্ক হওয়া উচিত এবং সেভাবে পরিকল্পনা করতে হবে। শীতকালীন রোগ থেকে নিরাপদে থাকার জন্য কিছু টিপস দেওয়া হলো-

স্বাস্থ্যকর খাদ্য : প্রতিদিন সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন। খাদ্যতালিকায় পরিপূর্ণ শস্য, মাছ, চর্বিহীন মাংস, সবুজ শাকসবজি, ফল এবং বাদাম থাকা উচিত। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

ব্যায়াম : শীতকাল জুড়ে ফিট থাকার জন্য শারীরিক ক্রিয়াকলাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। প্রতিদিন শারীরিক ব্যায়াম বা যোগ ব্যায়াম উষ্ণ রাখতে সাহায্য করবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে, যা ফ্লু এবং সর্দি-কাশির মতো মৌসুমি রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা দিবে।

পানি : প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পরিমাণে পানি পান করুন। পানি আমাদের শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ এবং বিষাক্ত পদার্থ বের করে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুস্থ রাখে। এটি শরীরের কোষে পুষ্টি পৌঁছে দেয় এবং শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

ঘুম : ঘুম সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল দূর করে এবং ক্যালোরি পোড়ায়।

স্বাস্থ্যবিধি : ভালো স্বাস্থ্যবিধি অভ্যাস করুন, ঘন ঘন হাত ধুয়ে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের বিস্তার রোধ করুন। এটি রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকারি পদক্ষেপ।

ধূমপান ত্যাগ করুন : শীতকালে ধূমপান শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে, তাই ধূমপান ছেড়ে দেওয়া উচিত।

ভিটামিন ডি : ভিটামিন ডি সুস্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। মেজাজ নিয়ন্ত্রণের জন্যও ভিটামিন ডি প্রয়োজন। তাই এ সময় খালি গায়ে উষ্ণ রোদে বসুন, সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টার মধ্যে ১ ঘণ্টা রোদে থাকলে ত্বকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি তৈরি হবে।

পোশাক : বাইরে যাওয়ার সময় উষ্ণ রাখার জন্য পশমি কাপড় ব্যবহার করুন।

গ্রিন-টি পান করুন : গ্রিন-টি পান শরীরকে শিথিল করতে পারে এবং আরও ভালো বিশ্রামে সহায়তা করতে পারে।

ধ্যানের অভ্যাস করুন : ধ্যান উদ্বেগ এবং হতাশা থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে।

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com