
ফারুকুর রাহমান, টেকনাফ।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলছে সংঘাত, অপর দিকে সেই সংঘাতের আতঙ্ক বিরাজ করছে কক্সবাজার সীমান্ত শহর টেকনাফে। তবে কিছুদিন মর্টার শেলের বিস্ফোরণের বিকট শব্দ না থাকলেও গত দুইদিন ধরে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে এপারে।
এদিকে সাবরাং ইউনিয়নের মো. শরীফ জানিয়েছেন, গত দুইদিন ধরে মংডু শহরে নিজেদের দুটি চৌকির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে আরাকান আর্মির সদস্যদের লক্ষ্য করে মর্টারশেল ও গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিজিপি ও জান্তা বাহিনী। এতে সীমান্তের ওপার থেকে
বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে। এসব শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা টেকনাফ।
তবে এ বিষয়ে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের মোহাম্মদ আমিন জানান, মর্টারশেল ও গ্রেনেডের বিস্ফোরণে বাড়িঘর কেঁপে ওঠায় রাতভর আতঙ্কের মধ্যে ছিল সীমান্ত এলাকার মানুষ।
এদিকে মিয়ানমারের সংঘাতের আতঙ্কে রাখাইন রাজ্যে থেকে এ পারের সীমান্ত রক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করছে।
তবে দালালদের মতে প্রতিদিন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যা হাজারের ওপরে। সে হিসেবে আগস্ট মাস থেকে এ পর্যন্ত ৫০ হাজার থেকে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দালালদের সহযোগিতায় গোপনে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে।
অপর দিকে একজন বৃদ্ধ রোহিঙ্গা নারীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, তিনিও মিয়ানমারের টাকায় ৫ লাখ কিয়াত দেওয়ার পর টেকনাফে কিছু দালাল চক্রের সহায়তায় ৩ দিন আগে টেকনাফ পৌঁছানোর কথা জানিয়েছেন।
তবে টেকনাফ সীমান্তে বসবাসরত বাসিন্দাদের দাবি, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ড কার্যত অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে পরছে। প্রশাসনের নাফ নদীতে কড়া নজরদারি ও পাহারা থাকলেও দেশের চলমান পরিস্থিতির সুযোগে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করছে বাংলাদেশে।
এদিকে এ বিষয়ে বিজিবি ও কোস্টগার্ড কর্মকর্তাদের দাবি, সীমান্তে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। তবে রোহিঙ্গা বোঝাই অনেক নৌকাকে অনুপ্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং অনেক রোহিঙ্গাকে পুশব্যাক করা হয়েছে।
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে নতুন করে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরি বলেন, সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে। তাঁদের নাফ নদী থেকে পুনরায় মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে।