লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে চিনির চাহিদা পূরণে এবার পরীক্ষামূলকভাবে স্টিভিয়া চাষ করে রীতিমতো সারা ফেলেছেন চলবলা ইউনিয়নের সোনারহাট এলাকার ভূপেন্দ্রনাথের ছেলে জীবনকৃষ্ণ রায়। তিনি আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। সরকারি চাকরির ফাঁকে নিজ বাড়িতে শখের বসে স্টিভিয়া বাগান তৈরি করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক দেশে চিনির বিকল্প হিসেবে স্টিভিয়া চাষাবাদ হচ্ছে। প্রতি কেজি স্টিভিয়ার পাউডার ৩০-৩৫ কেজি চিনির কাজ করবে। ডায়াবেটিস রোগীদের সমস্যা বাড়ায় চিনি। কিন্তু এতে তেমন কোনো সমস্যা নেই। পরীক্ষামূলক ভাবে স্টিভিয়া চাষ করে সফল হয়েছেন উপসহকারী প্রকৌশলী জীবনকৃষ্ণ রায়। মাত্র ১৭টি স্টিভিয়া চারা থেকে প্রকল্প শুরুর ৮ মাসেই শতাধিক চারা হয়েছে বাগানে। এখন পরিকল্পনা বাণিজ্যিক ভাবে চাষের।
জীবনকৃষ্ণ বলেন, ‘একটি প্রশিক্ষণে গিয়ে স্টিভিয়া সম্পর্কে আলোচনা শুনি। তখন বাড়িতে স্টিভিয়ার গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করি। এরপর ইউটিউব দেখে অনলাইনে অর্ডার করে পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়ন থেকে ১৭টি চারা সংগ্রহ করে রোপণ করি। মাত্র ৮ মাসের ব্যবধানে বাগানে ২০০ চারা হয়েছে।’
জানা গেছে, তার ‘বাগানে উৎপাদিত স্টিভিয়ার গুঁড়া রংপুর ডায়াবেটিস সমিতিতে রোগীদের জন্য পাঠানো হয়। রোগীরা এর চা পান করে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে সফল হয়েছেন। আগামীতে ১ একর জমিতে স্টিভিয়া চাষ করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
সরেজমিনে জানা যায়, স্থানীয়রা অনেকেই স্টিভিয়া দেখতে আসেন, বাগান থেকে চারা সংগ্রহ করেন। গত ২ দিনের অতি বৃষ্টির কারণে অনেক চারা মরে গেছে। অনেকে স্টিভিয়ার পাতা মুখে চিবিয়ে মিষ্টির স্বাদ নিচ্ছেন। অনেকেই দু’একটি গাছ বাড়িতে লাগানোর জন্য নিয়ে যাচ্ছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুল কাদির গণি বলেন, ‘স্টিভিয়ার পাতায় মিষ্টি স্বাদ মিললেও তা ডায়াবেটিস রোগির জন্য সেবনযোগ্য।’
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সাইখুল আরেফীন বলেন, ‘স্টিভিয়া চিনির বিকল্প ফসল। লালমনিরহাটে একজন চাষ করেছেন বলে জেনেছি। আমরা জেলার কৃষকদের স্টিভিয়া চাষাবাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো। এর চাষাবাদ বাড়লে চিনির ঘাটতি পূরণে বেশ সহায়ক হবে।’