খাতা-কলমে কাজ হলেও বাস্তবে শূন্য ; অভিযোগ বড় আলমপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ! 


dailymukti24 প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৪, ২০২৪, ৯:৫৬ পূর্বাহ্ন /
খাতা-কলমে কাজ হলেও বাস্তবে শূন্য ; অভিযোগ বড় আলমপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ! 
পীরগঞ্জ (রংপুর) উপজেলা প্রতিনিধি;
রংপুরের পীরগঞ্জে কাজ না করেই অস্তিত্বহীন প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উপজেলার ৭নং বড় আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান সেলিমের বিরুদ্ধে। গত ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে এলজিএসপি-৩ বরাদ্দকৃত ৪টি প্রকল্প  কাগজে-কলমে প্রকল্পটি শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে মর্মে সবকটি প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান সেলিম মিয়া । শুধু তাই নয়, প্রকল্পে আপন ছোট ভাই হাফিজ আব্দুন নুর সোহেলকে ঠিকাদার সাজিয়ে ভুয়া মাস্টার রোলের মাধ্যমে বরাদ্দের অর্থও পরিশোধ করা হয়েছে। অথচ সরেজমিনে এ প্রকল্পের কোনোই অস্তিত্ব মেলেনি। ৪টি প্রকল্পে মোট ৪ লাখ ১৮ হাজার ১৫২ টাকা । ইউনিয়নের বেকার যুবক ও যুবতীদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে আয় বর্ধক ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের নামে বরাদ্দ ছিলো ৭৫ হাজার টাকা তবে এমন প্রশিক্ষণ হয়নি ইউনিয়ন পরিষদে এবং তা না করেই প্রশিক্ষণের নামের বরাদ্দকৃত অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ,  ইউনিয়ন পরিষদের পুকুর পাড়ে বিনোদন পার্ক স্থাপনের নামে বরাদ্দ ছিলো ২ লাখ টাকা সেটিরও কোনো কাজ না করেই বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ, ইউনিয়ন পরিষদসহ পত্নীচড়া বাজার ও আশপাশে সিসি ক্যামেরা স্থাপনে বরাদ্দ ছিলো ১ লাখ ৪৩ হাজার ১৫২ টাকা সেটিও কোনো কাজ না করেই বরাদ্দের পুরো টাকা আত্মসাৎ এছাড়াও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অবস্থিত ডেলিভারি ধাত্রীদের সন্মানী ভাতা উত্তোলন করে আত্মসাৎ।
বড় আলমপুর ইউনিয়নের নাম অনিচ্ছুক ক’জন স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ‘বর্তমান চেয়ারম্যানের আমলে নাকি কোনো বরাদ্দই নাই, এখন শোনোছি অনেক টাকা বরাদ্দ আইছিলো ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাকি কাজ না করি সব খাইছে’।
 বড় আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আশরাফুল আলমের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,  তার কাছ থেকে বেশকিছু কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে চেয়ারম্যান তবে  বরাদ্দ হয়েছিলো বরাদ্দের সব টাকা চেয়ারম্যান এর কাছে আছে আমিও অনেকদিন চেয়ারম্যানকে  কাজের জন্য বলে আসতেছি সে করবো করবো বলে সময় নিচ্চে এতে আমিও মহা বিপদে আছি।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য শিমুল মিয়া জানান আমি নিজেও তিনটা প্রকল্পের সভাপতি ছিলাম আমাকে কোনো কিছু না বলেই প্রকল্পের টাকা নিজেই উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান । ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য সুরুজতারার বেশ কয়েকটি প্রকল্পের সভাপতি ছিলেন কেনো কাজ করা হয়নি এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন টাকা তুলেছি তবে কাজ করা হবে আর সব বিষয় চেয়ারম্যান জানে আমি বেশি কিছু জানি না ।
৯নং ও ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফুল আলম ও আবু তাহেরের কাছে প্রকল্পের কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এসব প্রকল্পের কোনো কাজই হয়নি এটা সত্য, তবে প্রকল্পের টাকা চেয়ারম্যান উত্তোলন করে কি করেছেন আমরা জানি না । অন্যান্য ইউপি সদস্যরাও জানান এসব প্রকল্পের টাকা চেয়ারম্যান উত্তোলন করেছে তবে কোনো কাজ করা হয়নি । তবে জেনেছি সে প্রকল্পের সব টাকা উত্তোলন করে চেয়ারম্যান কি করেছে আমরা তা জানি না।
এ ব্যাপারে বড় আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান সেলিম মিয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই বলে ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ খাদিজা বেগম বলেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
এ বিষয়ে রংপুরের স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক (উপসচিব) রায়হান কবির জানান, ইউপি চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি  তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা ।