‘ফারুক এক ক্রোর চায়, এক কোটি চায়’ বলে ব্যবসায়ীকে হয়রানি, অডিও ফাঁস


dailymukti24 প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ১০, ২০২৫, ১২:২৯ অপরাহ্ন /
‘ফারুক এক ক্রোর চায়, এক কোটি চায়’ বলে ব্যবসায়ীকে হয়রানি, অডিও ফাঁস
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মামলার রফাদফার টাকা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে দফায় দফায় হয়রানির অভিযোগ ওঠেছে নূরে আলম সিদ্দিকী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে, যেখানে তিনি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের জন্য এক কোটি টাকার কথা বলেন।

এ নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মনির হোসেন ও তার পরিবার।

অভিযুক্ত নূরে আলমের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ গ্রামে।

ভুক্তভোগী ঢাকার এয়ার টিকিটিং ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, ‘আমার পরিচিত আকরাম, তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে ফারুক নামে এক ব্যক্তি। সেই মামলায় ৮০ নম্বর আসামি সে। বিষয়টি নিয়ে আমার কথা হয় নূরে আলমের সঙ্গে। তখন তিনি (নূরে আলম) মামলা থেকে নাম প্রত্যাহার করতে গেলে কোটি টাকার চাহিদার কথা জানান। এরপর বিষয়টি নিয়ে আমি আর কোনো কথা বলিনি। এরমধ্যে নূরে আলম আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে আমার নামেও মামলা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’

ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডে শোনা যায়, নূরে আলম সিদ্দিকী ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মনির হোসেনকে মামলার বিষয়ে বলছেন, ‘আমি ফারুকের সাথে কথা বলেছি, আপনাকে একটা ধারণা দেই, ফারুক ওয়ান ক্রো চায়, এক কোটি চায়! আমি বললাম এটা একটা কথা হলো! এবার বুঝেন আকরাম কত টাকা ইনকাম করছে, এসবের রশিদও আছে।

পরে নূরে আলমকে বলতে শোনা যায় ‘আমারে ফারুক বলছে ফোনে এসব কথা না বলে সরাসরি বলতে। দেখা করে আলোচনা করবো।’

রেকর্ডে মনির হোসেনকে বলতে শোনা যায়, এক কোটি টাকা এটা কথা একটা কথা হলো!

জবাবে নূরে আলম বলেন, ‘সামনা-সামনি আসেন, এটা তো আমার কথা না, আমি যাস্ট তার কথাটা বললাম, পরে তো একটা মধ্যস্থতা হবে। আমি অবশ্য এ ব্যাপারে কথা বলতে চাই নাই, আমি তো আকরামকে চিনিও না। দেখা হবে আপনার সাথে।’

এ বিষয়ে ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, মামলা বাণিজ্যে সফল না হয়ে আমার পেছনে লেগেছেন নূরে আলম। এরমধ্যে আমার ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য নানা ধরণের তৎপরতা চালাচ্ছে। আমার কাছে পাসপোর্ট এবং টাকা জমা দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ দিচ্ছে নূরে আলম। আমি সরাসরি বলেছি যদি এমন কিছু জমা দেয়া হয় আমার কাছে, তাহলে অফিসে এসে নিয়ে যেতে, কিন্তু তাও করছে না। অন্য দিকে আমার নামে মামলা দেয়ার কথাও শুনছি। খুব শঙ্কায় আছি।আমি বললাম এটা একটা কথা হলো! এবার বুঝেন আকরাম কত টাকা ইনকাম করছে, এসবের রশিদও আছে। আমারে ফারুক বলছে ফোনে এসব কথা না

মনির হোসেনের স্বজনরা বলেন, ‘অযথা ভয় দেখিয়ে মামলা একটি চক্র মামলা বাণিজ্য করতে চেষ্টা করছে। এ নিয়ে পরিবারের সবাই আতঙ্কে দিন পার করতে হচ্ছে। কি করবো বুঝতে পারছিনা আমরা’

মামলা বাণিজ্য ঠেকাতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।

বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত নূরে আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড নিয়ে বলেন, ‘টাকা কে চেয়েছে তা আগে বুঝেন।’

কথা শেষ না করে সঙ্গে সঙ্গেই ফোন কেটে দেন তিনি।

পরে একাধিকবার কল ও ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও নূরে আলমের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টের পর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের হিড়িক পড়েছে। চলছে মামলা বাণিজ্যও। পরে নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। হয়রানিমূলক মামলা ঠেকাতে বিজ্ঞপ্তি দেয় পুলিশ। এসব বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়।

পাশাপাশি এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।