সুরাইয়ার মৃত্যুতে পরিবারে আহাজারি: দ্রত সুষ্ঠু বিচার চায় পরিবার


dailymukti24 প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ৬, ২০২৫, ৮:৩২ অপরাহ্ন /
সুরাইয়ার মৃত্যুতে পরিবারে আহাজারি: দ্রত সুষ্ঠু বিচার চায় পরিবার
নড়াইল জেলা প্রতিনিধি।
যশোরে এক আত্মীয়ের কাছে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় সুরাইয়া। এরপর আর কথা হয়নি। আমার মেয়ে যদি অসুস্থ থাকত, পাঁচ দিন ভুগত, আমি মনকে বুঝ দিতে পারতাম। এখন তো আমি আমার মনকে বুঝ দিতে পারতিছিনে। আমার মণিকে কত যে কষ্ট দিয়ে মারিছে। আমি তো আমার সন্তানকে ফিরে পাব না। আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই আমি। এভাবেই মেয়ের ছবি ফোনে দেখিয়ে আহাজারি করছিলেন বাগেরহাটের ফকিরহাট থেকে উদ্ধার হওয়া নড়াইলের সুরাইয়া শারমিন দৃষ্টির (৩৩) মা সাবেজান বেগম। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সুরাইয়ার বাবার বাড়ি নড়াইল পৌরসভার আলাদাতপুরে তার মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের শোক প্রকাশ করতে দেখা যায়। এখন সুরাইয়া তার বাবার বাড়িতে থাকতেন।
সুরাইয়া নড়াইল সদর হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ে চাকরি করতেন। তার স্বামী মাহফুজ একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তাদের একটি মেয়ে রয়েছে। গত শুক্রবার যশোরে একটি কাজের কথা আছে জানিয়ে পরিচিত এক বোনের বাসার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন ওই গৃহবধূ। বুধবার সন্ধ্যার দিকে সুরাইয়ার মরদেহ দাফন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সুরাইয়ার ছোট বোন বন্যা বলেন, যেখানে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে, ওই এলাকায় আঁখি নামে তার (সুরাইয়া) এক বান্ধবীর বাসা আছে। আমরা জানতে পারছি, আপু সেখানেই গিয়েছিল।
সুরাইয়ার পরিবারের সদস্যরা বলেন, ওই গৃহবধূ যশোরের দড়াটানায় পৌঁছে ছোট বোন বন্যাকে মুঠোফোনে জানিয়েছিলেন। এরপর পরিবারের কারও সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ হয়নি। যশোরে যে নারীর কাছে যাওয়ার কথা ছিল, পরিবারের লোকজন তার কাছে সুরাইয়ার খবর জানতে চান। ওই নারী প্রথমে বলেন, ওই গৃহবধূ তার কাছেই আছেন। পরে ওই নারী বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সুরাইয়ার সঙ্গে তার কথা হয়েছে, তিনি খুলনায় এক বান্ধবীর কাছে গিয়েছেন। এরপর বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে না পেরে শনিবার নড়াইল সদর থানায় একটি জিডি করেন সুরাইয়ার মা।
এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: সাজেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ফকিরহাট থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর নড়াইল থেকে বুধবার সকালে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে ফকিরহাট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
গ্রেফতার আসামীরা হলেন- নড়াইল এলাকার সাইদুর রহমান (৩৫), ফকিরহাট জয়পুর এলাকার মাহিন্দ্রা চালক আজিজুর রহমান নয়ন (৩২) ও মাহিন্দ্রা চালক শহিদুর রহমান (৪৫)।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার জয়পুর গ্রামে নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য সলেমান শেখের পুকুর থেকে শরীরে ইট বাঁধা ও গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় সুরাইয়া শারমিন দৃষ্টির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।