জুলাই বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা: মামলায় ফ্যাসিবাদী দোসরদের বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে বেরোবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ


dailymukti24 প্রকাশের সময় : মে ৫, ২০২৫, ৪:০৩ অপরাহ্ন /
জুলাই বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা: মামলায় ফ্যাসিবাদী দোসরদের বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে বেরোবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
মোঃ সোলাইমান, বেরোবি প্রতিনিধি
জুলাই বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও নিপীড়নের মামলায় গড়িমসি এবং ফ্যাসিবাদী শক্তির সহযোগীদের ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) তীব্র বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৫ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে এক জ্বালাময়ী মিছিল বের হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা উচ্চস্বরে স্লোগান দেন:
– “মামলা নিয়ে টালবাহানা চলবে না, চলবে না!”
– “সাঈদ-ওয়াসিমের রক্তের দাবি, আমরা ভুলিনি!”
– “আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে?”
– “আপস নাকি সংগ্রাম? সংগ্রাম, সংগ্রাম!”
– “দালালি নাকি রাজপথ? রাজপথ, রাজপথ!”
শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ:
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান তার বক্তব্যে বলেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলাকারীরা আজও নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নয় মাস পার হলেও স্বৈরাচারের এই দোসরদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রশাসনের এই নিষ্ক্রিয়তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা স্পষ্ট বলছি, যদি মামলা নিয়ে কারচুপি বা কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র করা হয়, তাহলে আরেকটি জোরদার আন্দোলনের মাধ্যমে প্রশাসনকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করা হবে।”
ছাত্রদলের নেতার বক্তব্য:
ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক মুরসালিন মুন্না বলেন, “বেরোবি প্রশাসন জুলাই বিপ্লবে নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের ন্যায়বিচার দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ৯ মাসেও মামলা দায়ের করা হয়নি—এটি চরম লজ্জার। আমরা দাবি করছি, সকল অপরাধীকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনোভাবেই দোষীদের রক্ষা করা চলবে না। এছাড়া, যারা এই হামলায় জড়িত, তাদের প্রশাসনের কোনো পদে পদায়ন বা পুরস্কৃত করা যাবে না। নইলে আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলব।”
শিবিরের অবস্থান:
বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাধারণ সম্পাদক সুমন সরকার বলেন, “আবু সাঈদ শহীদ হওয়ার ৯ মাস পরও আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে শুরু করে আদালত পর্যন্ত মামলা নিয়ে ইচ্ছাকৃত গড়িমসি চলছে। আগের মামলায় কেবল কয়েকজন সাধারণ ছাত্র-শিক্ষক ও দুই কনস্টেবলকে প্রতীকী গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। কিন্তু মূল হোতারা আজও অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে—কেউ শিক্ষকতা করছেন, কেউ কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, আবার কেউ ট্রান্সফার নিয়ে নতুন পদে যোগ দিয়েছেন। যদি এই ষড়যন্ত্র চলতে থাকে, তাহলে আমাদের আন্দোলন আরও তীব্র হবে।”
বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলীর কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন।