বিশাল মাহমুদ জিম, লালমনিরহাট
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় সংঘবদ্ধ হামলা চালিয়ে সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় থানার ওসিসহ অন্তত ২৩ জন আহত হন, যার মধ্যে দুই পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ২০০-২৫০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল থানা চত্বরে হামলা চালায়। তারা চেয়ার-টেবিল, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করে, ইট-পাটকেল ছুড়ে থানার জানালার কাঁচ ও দরজা ভেঙে ফেলে।
পাটগ্রাম থানার ওসি মিজানুর রহমান (লাল রঙে ও বোল্ডে) বলেন, “গুরুতর আহত দুই পুলিশ সদস্যকে রংপুর মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। আমি ও আরও ছয়জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছি। দুর্বৃত্তরা হাজতখানার তালার চাবি নিয়ে জোরপূর্বক আসামি বেলাল হোসেন ও সোহেল রানা চপলকে ছিনিয়ে নেয়।”
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ছোড়ে, কিন্তু উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। পরে লালমনিরহাট, হাতিবান্ধা ও কালীগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্য এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওসি জানান, “হামলায় জড়িতদের মধ্যে অনেককেই শনাক্ত করা হয়েছে। তারা স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত।”
পুলিশ জানায়, বুধবার সন্ধ্যায় সরোরবাজারে চাঁদাবাজির সময় বেলাল ও সোহেলকে হাতেনাতে আটক করা হয়। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পুলিশ আরও জানায়, তারা স্থানীয় শ্রমিক দলের নেতা এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের নেতৃত্বেই এই হামলা সংঘটিত হয়।
তবে পাটগ্রাম উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউর রহমান সোহেল এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি থানায় ছিলাম না, আটক হওয়া কেউ আমাদের দলীয় কর্মী নয়। একটি রাজনৈতিক মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপিকে জড়িয়ে বিভ্রান্ত করছে।”
এ বিষয়ে এনসিপি নেতা সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে লেখেন, “বিএনপি নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা আদায় করছে। ধরা পড়লে তাদের ছাড়াতে পরিকল্পিতভাবে থানা ঘেরাও ও হামলা চালানো হয়।”
সাজাপ্রাপ্ত আসামি বেলাল হোসেন মমিনপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে এবং সোহেল রানা চপল মির্জার কোর্ট এলাকার সামসুল হকের ছেলে। পুলিশ বলছে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং দায়ীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :