মোঃ আকাশ উজ্জামান শেখ, রামপাল (বাগেরহাট) প্রতিনিধি:
আজ হিজরি ১০ মুহররম, পবিত্র আশুরা। ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও হৃদয়বিদারক এক দিনের নাম আশুরা। এ দিনে সংঘটিত হয়েছে একাধিক স্মরণীয় ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। বিশেষত, ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) কারবালার প্রান্তরে ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে শাহাদাতবরণ করেন, যা মুসলমানদের জন্য এক গভীর শোক ও শিক্ষা বহন করে।
এই দিনটি বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের নিকট অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। শিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে আশুরা স্মরণে মিছিল, মাতম, অশ্রুপাত ও নানা আনুষ্ঠানিকতা দেখা গেলেও সুন্নি মুসলিমরা মহানবীর (সা.) আদর্শ অনুসরণে রোজা, দোয়া ও দান সদকার মাধ্যমে দিনটি পালন করে থাকেন। হাদিসে বর্ণিত আছে, আশুরার দিনে রোজা রাখলে তা পূর্ব বছরের গোনাহ মোচনের কারণ হয়। হজরত মুহাম্মদ (সা.) আশুরার আগের দিন (৯ মুহররম) এবং পরের দিন (১১ মুহররম) সহ তিন দিন রোজা রাখার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন।
১. আসমান, জমিন, পাহাড় ও সাগরের সৃষ্টি এ দিনেই।
২. হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি ও জান্নাতে প্রবেশ।
৩. হজরত নূহ (আ.) মহাপ্লাবনের পর জুদি পাহাড়ে অবতরণ।
৪. হজরত ইব্রাহিম (আ.) নমরুদের আগুন থেকে মুক্তি পান।
৫. হজরত আইয়ুব (আ.) দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি লাভ করেন।
৬. হজরত ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি পান।
৭. হজরত ইসা (আ.) আসমানে উত্তোলিত হন।
৮. হজরত ইউসুফ (আ.) এর সাথে হজরত ইয়াকুব (আ.) পুনর্মিলন ঘটেন।
৯. হজরত মুসা (আ.) ও তাঁর অনুসারীদের ফেরাউন থেকে মুক্তি এবং ফেরাউন নীল নদে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন।
১০. হজরত মুহাম্মদ (সা.) হিজরত করে মদিনায় আগমন করেন।
১১. এবং সর্বশেষ, কারবালার প্রান্তরে হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) ও তাঁর ৭৭ জন সাথী শাহাদাতবরণ করেন।
মুসলিমদের উচিত এ দিনটিকে আত্মশুদ্ধির দিন হিসেবে গ্রহণ করা, বেশি বেশি নফল ইবাদত, দোয়া ও দান সদকা করা। রোজা রাখা না হলেও এটি অত্যন্ত পুণ্যময় আমল হিসেবে সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। আশুরার দিনটি শুধু শোক নয়, বরং ত্যাগ, ধৈর্য, ন্যায়ের জন্য দৃঢ়তা ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের প্রতীক।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে আশুরার শিক্ষা থেকে উপকৃত হওয়ার তাওফিক দিন।
আমিন।
আপনার মতামত লিখুন :