পি আর পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ: গণতন্ত্রের জন্য আশীর্বাদ নাকি অস্থিরতার ফাঁদ
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সম্প্রতি ‘পি আর পদ্ধতি’ বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু তৈরি হয়েছে। এই পদ্ধতি অনেকে ভোটের ন্যায্যতা ও জনমতের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটাবে বলে আশাবাদী। আমার মতে, এটি তাত্ত্বিকভাবে সঠিক হলেও বাস্তবতায় এর প্রভাব সীমিত হতে পারে।
কারণ:
১.জনসচেতনতার ঘাটতি: ৫৬% মানুষ পি আর পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত নয়। জনগণের অজ্ঞতা এই প্রক্রিয়াকে কার্যকরী হতে দেয় না।
২. স্থিতিশীলতার প্রশ্ন: বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একাধিক দলের উপস্থিতি জোট সরকার ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
৩. নীতি-প্রণয়নে জটিলতা: ভিন্ন মতাদর্শের দলের সমন্বয় কঠিন, যা প্রশাসনিক প্রক্রিয়াকে ধীর করে।
৪.ছোট দলের অযৌক্তিক প্রভাব: সামান্য আসন নিয়েও ছোট দল বড় প্রভাব ফেলতে পারে, যা গণতন্ত্রকে দুর্বল করে।
৫. প্রতিনিধি-জনগণের দূরত্ব: ভোটাররা সরাসরি প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে না, যা জবাবদিহিতা কমায়।
৬. অচলাবস্থার ঝুঁকি: অতিরিক্ত দলীয় বিভাজন সংসদকে অচল করে দিতে পারে।
সংবিধান ১৯৭২ মূলত FPTP (সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থী বিজয়ী) পদ্ধতিকে নির্দেশ করে। নারীদের সংরক্ষিত আসনে আনুপাতিক বরাদ্দ থাকলেও পূর্ণ পি আর পদ্ধতি চালু নয়।
পি আর পদ্ধতি ভোটের প্রতিফলন বাড়াতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় স্থিতিশীল ও কার্যকর সরকার বজায় রাখা আরও জরুরি। আমার মতামত অনুযায়ী, গণতন্ত্রের জন্য একটি শক্তিশালী ও স্থায়ী সরকারই অগ্রাধিকার পাবে, সম্পূর্ণ পি আর প্রক্রিয়ার চেয়ে।
লেখক:- আবু নাঈম আল কাওসার তপু
আইন বিভাগ, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি
আপনার মতামত লিখুন :