ঢাকা ০৬:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
কালীগঞ্জে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হাতেই ক্যাসিনো সম্রাজ্য - দৈনিক মুক্তি

কালীগঞ্জে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হাতেই ক্যাসিনো সম্রাজ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট)

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলাজুড়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কিছু সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মী প্রকাশ্যে পরিচালনা করছেন কাসিনো ও অনলাইন জুয়ার আসর। উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা, বিশেষ করে কলেজপাড়া, কালীগঞ্জ বাজার, মেডিকেল মোড়, সোনামারি বাজার,  চৌধুরীরমোড়,  তুষভান্ডারবাজার , কাকিনা বাজার ও চন্দ্রপুর ও ভোটমারী, ভুল্ল্যারহাট, হাজরানিয়া এলাকায়  রাতভর চলছে এই অবৈধ জুয়ার আসর। সন্ধ্যা হলেই এসব ছাত্রলীগ নেতারা তাদের এজেন্ট বাহিনী নিয়ে মহরা দিয়ে থাকেন। তার জুয়ারীরা বাজার গুলোর ছোট ছোট দোকানের কেবিনে বসে মোবাইল আপস্ এর রুমে এইসব অনলাইন জুয়া খেলে থাকেন। এ জুয়ায় আসক্ত এখন কিশোর হতে বৃদ্ধ পর্যন্ত। রাত ১১/১২ হলের চলে এসকল জুয়ার টাকার উত্তোলন। আর এসবের যোগান দিচ্ছে উপজেলার কিছু এজেন্ট ব্যাংকিং বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এসকল এজেন্ট ব্যাংকিং গুলো গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকতে দেখা যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত কিছু ছাত্রলীগ কর্মী যারা সাবেক সমাজকল্যানমন্ত্রী পুত্র লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ এর আর্শিবাদ পুষ্ট হওয়ার কারনে খুব সহজেই তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে গড়ে তুলেছিল এসব ক্যাসিনোর সম্রাজ্য। এ ক্যাসিনো জুয়ার সাম্রাজ্য গড়ে তুলে অনেক ছাত্রলীগ নেতা হয়েছেন শত কোটি টাকার মালিক। গড়েছেন বিলাসবহুল আলিশ্বান বাড়ি, চড়ছেন দামি গাড়িতে। পুরো উপজেলা জুড়ে বেশ কয়েকজন তরুণ নেতা-কর্মী এই অবৈধ ক্যাসিনো চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারমধ্যে রয়েছেন তুষভান্ডার এলাকা, কালীগঞ্জ বাজার, ভুল্লারহাট ও ভোটমারী বাজার। উপজেলার এ চারটি বাজারেই ক্যাসিনো সম্রাটদের ক্যাসিনোর রাজত্ব রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগে যাদের নাম চলে আসে তাদের অধিকাংশই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ রাজনীতির সাথে জড়িত বলে তথ্য প্রমান মিলেছে।

অভিযোগ উঠেছে, এই কাসিনো থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতবদল হচ্ছে, যার বড় অংশই ব্যবহার হচ্ছে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক ব্যবসায়। স্থানীয়দের দাবি—এই অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যের পেছনে আছেন এক প্রভাবশালী মন্ত্রীপুত্র, যার নির্দেশেই এরা এলাকাজুড়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সরকার পরিবর্তনের পর এসকল অপরাধীর শেল্টার দাতা হিসাবে নানা ধরনের গুন্জন রয়েছে একটি নতুন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে।

কালীগঞ্জের সাধারণ মানুষ বলছেন, এই জুয়া ব্যবসার কারণে এলাকার যুবসমাজ ধ্বংসের মুখে পড়ছে। তরুণরা নেশা ও জুয়ার নেশায় জড়িয়ে পড়ছে, পরিবারে বাড়ছে কলহ, সমাজে বাড়ছে অপরাধ। জুয়ার কবলে পড়ে কেউ সব হারিয়ে বেছে নিচ্ছে আত্বহত্যার পথও। তবু আশ্চর্যের বিষয়—জেলা প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেউই এখনও পর্যন্ত কার্যকর কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে।

স্থানীয় এক প্রবীণ নাগরিক বলেন, “যদি এখনই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, কালীগঞ্জে অরাজকতা সৃষ্টি হবে—যার দায় প্রশাসন এড়াতে পারবে না।”

জনগণের দাবি, দ্রুত এই অবৈধ ক্যাসিনো চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালিয়ে এলাকাকে সন্ত্রাস ও জুয়ার হাত থেকে রক্ষা করা হোক।

কিছু রাজনৈতিক নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা, তাদের দাবি আসন্ন ত্রয়োদশ নির্বাচনে এ ক্যাসিনো জুয়ার কালো টাকা নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে ভোটারদের। আবার এসকল অপরাধী যেহেতু ফ্যাসিস্ট সরকারের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের তাই তারা দেশ বিরোধী  ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শান্তিপ্রিয় কালীগঞ্জকে যেকোনো মুহূর্তে অশান্ত করে তুলতে পারেন।  তাই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

(বি:দ্র: এ সকল অপরাধীর তালিকা সহ বিস্তারিত থাকছে আমাদের পরবর্তী সংবাদে।)

ট্যাক

কালীগঞ্জে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হাতেই ক্যাসিনো সম্রাজ্য

আপডেট সময় ০৩:০৫:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট)

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলাজুড়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কিছু সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মী প্রকাশ্যে পরিচালনা করছেন কাসিনো ও অনলাইন জুয়ার আসর। উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা, বিশেষ করে কলেজপাড়া, কালীগঞ্জ বাজার, মেডিকেল মোড়, সোনামারি বাজার,  চৌধুরীরমোড়,  তুষভান্ডারবাজার , কাকিনা বাজার ও চন্দ্রপুর ও ভোটমারী, ভুল্ল্যারহাট, হাজরানিয়া এলাকায়  রাতভর চলছে এই অবৈধ জুয়ার আসর। সন্ধ্যা হলেই এসব ছাত্রলীগ নেতারা তাদের এজেন্ট বাহিনী নিয়ে মহরা দিয়ে থাকেন। তার জুয়ারীরা বাজার গুলোর ছোট ছোট দোকানের কেবিনে বসে মোবাইল আপস্ এর রুমে এইসব অনলাইন জুয়া খেলে থাকেন। এ জুয়ায় আসক্ত এখন কিশোর হতে বৃদ্ধ পর্যন্ত। রাত ১১/১২ হলের চলে এসকল জুয়ার টাকার উত্তোলন। আর এসবের যোগান দিচ্ছে উপজেলার কিছু এজেন্ট ব্যাংকিং বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এসকল এজেন্ট ব্যাংকিং গুলো গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকতে দেখা যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত কিছু ছাত্রলীগ কর্মী যারা সাবেক সমাজকল্যানমন্ত্রী পুত্র লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ এর আর্শিবাদ পুষ্ট হওয়ার কারনে খুব সহজেই তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে গড়ে তুলেছিল এসব ক্যাসিনোর সম্রাজ্য। এ ক্যাসিনো জুয়ার সাম্রাজ্য গড়ে তুলে অনেক ছাত্রলীগ নেতা হয়েছেন শত কোটি টাকার মালিক। গড়েছেন বিলাসবহুল আলিশ্বান বাড়ি, চড়ছেন দামি গাড়িতে। পুরো উপজেলা জুড়ে বেশ কয়েকজন তরুণ নেতা-কর্মী এই অবৈধ ক্যাসিনো চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারমধ্যে রয়েছেন তুষভান্ডার এলাকা, কালীগঞ্জ বাজার, ভুল্লারহাট ও ভোটমারী বাজার। উপজেলার এ চারটি বাজারেই ক্যাসিনো সম্রাটদের ক্যাসিনোর রাজত্ব রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগে যাদের নাম চলে আসে তাদের অধিকাংশই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ রাজনীতির সাথে জড়িত বলে তথ্য প্রমান মিলেছে।

অভিযোগ উঠেছে, এই কাসিনো থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতবদল হচ্ছে, যার বড় অংশই ব্যবহার হচ্ছে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক ব্যবসায়। স্থানীয়দের দাবি—এই অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যের পেছনে আছেন এক প্রভাবশালী মন্ত্রীপুত্র, যার নির্দেশেই এরা এলাকাজুড়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সরকার পরিবর্তনের পর এসকল অপরাধীর শেল্টার দাতা হিসাবে নানা ধরনের গুন্জন রয়েছে একটি নতুন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে।

কালীগঞ্জের সাধারণ মানুষ বলছেন, এই জুয়া ব্যবসার কারণে এলাকার যুবসমাজ ধ্বংসের মুখে পড়ছে। তরুণরা নেশা ও জুয়ার নেশায় জড়িয়ে পড়ছে, পরিবারে বাড়ছে কলহ, সমাজে বাড়ছে অপরাধ। জুয়ার কবলে পড়ে কেউ সব হারিয়ে বেছে নিচ্ছে আত্বহত্যার পথও। তবু আশ্চর্যের বিষয়—জেলা প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেউই এখনও পর্যন্ত কার্যকর কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে।

স্থানীয় এক প্রবীণ নাগরিক বলেন, “যদি এখনই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, কালীগঞ্জে অরাজকতা সৃষ্টি হবে—যার দায় প্রশাসন এড়াতে পারবে না।”

জনগণের দাবি, দ্রুত এই অবৈধ ক্যাসিনো চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালিয়ে এলাকাকে সন্ত্রাস ও জুয়ার হাত থেকে রক্ষা করা হোক।

কিছু রাজনৈতিক নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা, তাদের দাবি আসন্ন ত্রয়োদশ নির্বাচনে এ ক্যাসিনো জুয়ার কালো টাকা নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে ভোটারদের। আবার এসকল অপরাধী যেহেতু ফ্যাসিস্ট সরকারের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের তাই তারা দেশ বিরোধী  ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শান্তিপ্রিয় কালীগঞ্জকে যেকোনো মুহূর্তে অশান্ত করে তুলতে পারেন।  তাই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

(বি:দ্র: এ সকল অপরাধীর তালিকা সহ বিস্তারিত থাকছে আমাদের পরবর্তী সংবাদে।)