প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ৩, ২০২৫, ৬:২১ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ২, ২০২৫, ২:৪৬ পি.এম
অসময়ে বৃষ্টি রাণীশংকৈলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অসংখ্য কৃষক

মাহাবুব আলম,রাণীশংকৈল ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় গত তিন দিনের টানা মাঝারি ও হালকা বৃষ্টি ও বাতাসের তান্ডবে ১৩০ হেক্টর আমন ধান ও ২০ হেক্টর আলুর ক্ষয়ক্ষতি নিধারণ করেছে কৃষি অফিস। চলমান ঝড়বৃষ্টিতে উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও মাঝারি নিচু জমিতে পানি জমে গেছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ধান চাষিরা। বৃষ্টির পানিতে জমে থাকা পানি ও বাতাসের প্রভাবে অনেক জায়গায় কাঁচা ও পাকা ধানের গাছ নুইয়ে পড়েছে,সেইসাথে অনেক ধান ঝরে পড়েছে মাটিতে।
যেসব কৃষক পাকা ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য মাঠে ফেলে রেখেছিল তাদের ধান পানিতে ডুবে গেছে। এতে কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে গভীর উদ্বেগ ও হতাশা । কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে, চলতি আমন মৌসুমে এ উপজেলায় ২১৬৫৫ হেক্টর জমিতে ৫১ হাজার কৃষক ধানের আবাদ করেছে। বিভিন্ন প্রকার উন্নত জাতের ধানের এরমধ্যে ব্রি ধান-৭৫, ৮৭,৯৩,১০০,১০৩, বীণা- ১৭, সাদা স্বর্ণা, গুটি স্বর্ণা, সুমন স্বর্ণা। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে সারা উপজেলায় ১৩০ হেক্টর আমন ধান সরাসরি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এ নিয়ে কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের ক্ষতি থেকে উত্তরণের জন্য কাজ করছেন।
জানা গেছে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ, জমে থাকা বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশন, রোগ প্রতিরোধ ও সঠিক পরিচর্যা করলে নুয়ে পড়া ধানগাছও পুনরায় দাঁড়িয়ে ভালো ফলন দিতে পারে। এজন্য প্রয়োজন কৃষকদের সচেতনতা, সরকারি সহায়তা এবং স্থানীয় পর্যায়ে দ্রুত সমন্বিত উদ্যোগ।
উপজেলা জুড়ে অনেক গ্রামের মাঠে এমন চিত্র দেখা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অসংখ্য কৃষক।
লেহেম্বা ইউনিয়নের কৃষক শামীনুর রশিদ বলেন, আমি ৫ একর পাকা আমন ধান কেটে শুকানোর জন্য জমিতে ফেলে রেখেছিলাম কিন্তু গত তিন দিনের টানা মাঝারি বৃষ্টির পানিতে ভিজে গেছে এবং কিছু ধান জমিতে গজিয়ে গেছে। এখন কি করবো আমার মাথা কাজ করছেনা।
নন্দুয়ার ইউনিয়নের কৃষক শিল্পী বলেন,আমি ১ একর আমন ধান রোপন করেছি সকালে ধান বাড়িতে গিয়ে দেখি সব ধানগাছ শুয়ে গেছে, ফলন আর আশানুরূপ হবেনা, খরচটা উঠলে কোনমতে বাঁচতাম। এছাড়াও বাচোর ইউনিয়নের ফিরোজ, সাইফুল, অভিশেখ, নন্দুয়ার ইউনিয়নের জামাল, বাদশাসহ অনেকে ধানক্ষেতের এমন বিপর্যয় প্রসঙ্গে বলেন, গাছ যদি পুরোপুরি সোজা অবস্থায় ফিরিয়ে আনা না যায় তাহলে ফলন কমে যাবে। ফলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য উপজেলার কৃষকদের চোখে-মুখে নেমে এসেছে হতাশার ছাপ।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সহীদুল ইসলাম জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে অনেক কৃষকের ধান গাছের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা কৃষি পরিবার এতে চরমভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। প্রকৃতির উপর আমাদের কারও হাত নেই। তবে যেদিন থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে সেদিন থেকেই আমিসহ আমাদের কৃষি অফিসের সকল কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ করে যাচ্ছি যেন কৃষকেরা এটি থেকে দ্রুত উত্তরণ হতে পারে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে বিভিন্ন সময় প্রনোদনা দিয়ে তাদের সহায়তা করা হবে।
কপিরাইট© মুক্তি ২০১৮ সংরক্ষিত।