জনবল সংকটে ভোগান্তিতে সালথার প্রাথমিক শিক্ষা

আরিফুল ইসলাম | সালথা (ফরিদপুর)

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে জনবল সংকটে। উপজেলার ৭৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুমোদিত ৪৮৫টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৪৩১ জন শিক্ষক। এর মধ্যে কয়েকজন প্রশিক্ষণে ও ছুটিতে থাকায় প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।

শিক্ষক সংকটের পাশাপাশি দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরীর অভাবও গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৭৬টি স্কুলের মধ্যে মাত্র ৩৮টিতে দপ্তরি রয়েছে। ফলে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের তালা খোলা, ঝাড়ু দেওয়া, মালামাল রক্ষণাবেক্ষণসহ নানা দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেক সময় স্কুলে চুরি হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

অন্যদিকে, উপজেলা শিক্ষা অফিসেও জনবল সংকট তীব্র। ৪টি পদের বিপরীতে কাজ করছেন মাত্র একজন কর্মকর্তা। ফলে শিক্ষকদের দাপ্তরিক কাজ—NOC, GPF, বকেয়া বিল, বদলি-পরবর্তী প্রতিস্থাপন ও অনলাইন তথ্য সংশোধনে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। অফিস সহকারীর একক কাজের কারণে অনেক শিক্ষককে বাইরের দোকানে দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছে, যা শিক্ষকদের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে।

সালথা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতা মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, “প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিষয়টিতে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।”

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. তাশেমউদ্দিন জানান, অফিসে চারটি পদের মধ্যে তিনটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। দপ্তরি না থাকায় বিভিন্ন স্কুল থেকে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, ফ্যানসহ মালামাল চুরি হচ্ছে। তাই দপ্তরি নিয়োগ অত্যন্ত জরুরি।

জেলা শিক্ষা অফিসার মো. মহিউদ্দিন বলেন, “সারাদেশেই জনবল সংকট রয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, নিয়োগ হলেই সংকট নিরসন হবে।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সর্বাধিক জনপ্রিয়

জনবল সংকটে ভোগান্তিতে সালথার প্রাথমিক শিক্ষা

আপডেট সময় 02:06:11 pm, Monday, 29 September 2025

আরিফুল ইসলাম | সালথা (ফরিদপুর)

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে জনবল সংকটে। উপজেলার ৭৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুমোদিত ৪৮৫টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৪৩১ জন শিক্ষক। এর মধ্যে কয়েকজন প্রশিক্ষণে ও ছুটিতে থাকায় প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।

শিক্ষক সংকটের পাশাপাশি দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরীর অভাবও গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৭৬টি স্কুলের মধ্যে মাত্র ৩৮টিতে দপ্তরি রয়েছে। ফলে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের তালা খোলা, ঝাড়ু দেওয়া, মালামাল রক্ষণাবেক্ষণসহ নানা দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেক সময় স্কুলে চুরি হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

অন্যদিকে, উপজেলা শিক্ষা অফিসেও জনবল সংকট তীব্র। ৪টি পদের বিপরীতে কাজ করছেন মাত্র একজন কর্মকর্তা। ফলে শিক্ষকদের দাপ্তরিক কাজ—NOC, GPF, বকেয়া বিল, বদলি-পরবর্তী প্রতিস্থাপন ও অনলাইন তথ্য সংশোধনে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। অফিস সহকারীর একক কাজের কারণে অনেক শিক্ষককে বাইরের দোকানে দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছে, যা শিক্ষকদের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে।

সালথা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতা মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, “প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিষয়টিতে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।”

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. তাশেমউদ্দিন জানান, অফিসে চারটি পদের মধ্যে তিনটি দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। দপ্তরি না থাকায় বিভিন্ন স্কুল থেকে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, ফ্যানসহ মালামাল চুরি হচ্ছে। তাই দপ্তরি নিয়োগ অত্যন্ত জরুরি।

জেলা শিক্ষা অফিসার মো. মহিউদ্দিন বলেন, “সারাদেশেই জনবল সংকট রয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, নিয়োগ হলেই সংকট নিরসন হবে।”