অধ্যাপক সাইফুল হকের মৃত্যুতে তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির স্মরণসভার আয়োজন


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২৯, ২০২০, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ /
অধ্যাপক সাইফুল হকের মৃত্যুতে তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির স্মরণসভার আয়োজন
মোহাম্মদ রায়হান,তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধিঃ তিতুমীর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সাইফুল হকের মৃত্যুতে ভার্চুয়ালি স্মরণসভার আয়োজন করেছে তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতি। “স্মৃতিপটে আলোমাখা মুখখানিঃ লোকগাঁথায় প্রিয় সাইফুল স্যার” এই শিরোনামে  স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ এর সঞ্চালনায় আজ ২৮ ডিসেম্বর(সোমবার) রাত ৯টায় উক্ত স্মরণসভার সূচনা হয়।
 সভায় উপস্থিত ছিলেন- সরকারি তিতুমীর কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোসা. আবেদা সুলতানা, তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামাল উদ্দিন হায়দার, প্রয়াত সাইফুল স্যারের বন্ধু চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর-ডিএফপি মহাপরিচালক -স. ম গোলাম কিবরিয়া, সরকারি তিতুমীর কলেজের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ মো. এনামুল হক খান, তিতুমীর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিতা খোন্দকার, প্রয়াত সাইফুল হক স্যারের ছোট ভাই বাংলাদেশ টুরিস্ট পুলিশের এডিশনাল এসপি জাহিদুল হাসান, তিতুমীর কলেজের প্রাক্তণ ছাত্র বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিনিয়র রিপোর্টার মানিক মুনতাসীর, প্রাক্তন ছাত্র এশিয়ান টেলিভিশনের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক মাহবুব জুয়েল, তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি শামিম হোসেন শিশির।
প্রয়াত সাইফুল হক স্যার সম্পর্কে তিতুমীর কলেজের উপাদ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবেদা সুলতানা বলেন– স্যারের সাথে আমার পরিচয় হয় ২০১৮ সালে। প্রথম থেকেই স্যারকে দেখেছি অনেক আন্তরিক ও আধুনিক একজন শিক্ষক। মানুষ হিসেবে ছিলেন অনেক ইতিবাচক। শিক্ষক, ছাত্র, কর্মচারী সকলের সাথেই ছিলেন আন্তরিক। যে কোন কাজে স্যার ছিল অদ্বিতীয়। স্যারকে এভাবে হারাবো ভাবতে পারিনি। স্যারের চলে যাওয়া মেনে নেয়া খুবই কষ্টের। স্যারকে আল্লাহ জান্নাত দান করুক। তিতুমীর কলেজ প্রশাসন থেকে স্যারের পরিবারের পাশে দাড়াঁনোর আপ্রাণ চেষ্টা থাকবে আমাদের। স্যারের রেখে যাওয়া পরিবারের পাশে ইনশাআল্লাহ আমরা থাকবো।
অধ্যাপক কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন-তিতুমীরে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পরই স্যারের সাথে আমার একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। স্যার সবসময় আমাকে ভাইয়ের মতো দেখতেন। শিক্ষক ছাত্র সবাইকেই স্যার ভালোবাসতেন। তিতুমীরের বাহিরের শিক্ষার্থীদের সাথেও স্যার ছিলেন আন্তরিক। স্যার সব সময় আমাদের অনুপ্রেরণা দিতেন। স্যার ছিলেন শিক্ষার্থী ও সহকর্মী বান্ধব। স্যারের চলে যাওয়া আমাদের হৃদয়কে করেছে ক্ষত-বিক্ষত। স্যারের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিতা খোন্দকার বলেন- স্যারের সাথে আমার পরিচয় ৮বছরের মতো। স্যার ছিলেন আমাদের প্রতি অনেক আন্তরিক। স্যারের সাথে ছিল হাজারো স্মৃতি। এভাবে স্যার হঠাৎ চলে যাবেন কখনো ভাবতে পারিনি। আল্লাহ স্যারকে জান্নাত দান করুক।
তিতুমীর কলেজের প্রাক্তণ অধ্যক্ষ এনামুল হক খান বলেন– তিতুমীর কলেজের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ মো. এনামুল হক খান বলেন- এক সাথে স্যারের সাথে কত কাজ করেছি, কখনো স্যারকে রাগ করতে দেখিনি। স্যার ছিলেন খুবই ভালো মানুষ। ভালো মানুষ হওয়ার সব গুনই ছিল স্যারের মাঝে। স্যার সব সময় শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের জন্য আন্তরিক ভাবে কাজ করতেন। স্যারের এমন অকাল মৃত্যুতে আমরা ব্যর্থিত। স্যারের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
প্রয়াত সাইফুল স্যারের বন্ধু গোলাম কিবরিয়া স্মৃতিচারণ করে বলেন- সাইফুলকে আমি বন্ধু হিসেবে যতটুকু দেখে সে ছিল প্রকৃত পক্ষে একজন ভালো মানুষ। বন্ধুর মতোই সারাটা জিবন আমাদের সাথে মিশে ছিলেন। হয়তো আজকের এই অনুষ্ঠানে সাইফুলের পরিবারের মানুষের কষ্টের ভাগ নেয়া যাবে না, অনুভূতি দেখতে পাওয় যাবে না। সবার কাছে দোয়া চাই আল্লাহ যেন সাইফুলতে জান্নাত দান করেন।
সাইফুল হক স্যারের প্রাক্তণ ছাত্র মানিক মুনতাসীর স্মৃতিচারণ করে বলেন- আমি আমার বাবাকে হারানোর পর ঢাকায় এসে দুইজন অভিভাবক পেয়েছিলাম তারমধ্যে একজন হলো সাইফুল হক স্যার। ছাত্র জীবনে স্যারের সাথে আমার সম্পর্ক ছিলো বাবা ছেলের মতো। দেখা হলেই স্যার আমার পিঠে হাত বুলিয়ে দিতেন। স্যারের সাথে হাজারো স্মৃতি। এভাবে স্যার চলে যাবেন বিশ্বাস করতে পারিনি। তবুও বিদায় মেনে নিতে হবে। সবাই কাছে স্যারের জন্য দোয়া চাই। স্যারের পরিবারের সকলকে ধৈর্য্য ধরার তৌফিক দান করুক।
প্রাক্তণ ছাত্র মাহবুব জুয়েল বলেন– তিতুমীরের হলে থাকার কারনে স্যারের সাথে আমার পরিচয় হয়। তখন থেকেই দেখেছি স্যার ছিলেন অনেক আন্তরিক। আমাদের অনেক হেল্প করতেন স্যার। স্যার ছিল সত্যিকারের একজন ভালো মানুষ। স্যারের মৃত্যুতে আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। স্যারের মাগফিরাত কামনা করছি।
সাংবাদিক সমিতির  সভাপতি শামিম হোসেন শিশির বলেন- স্যারকে সেই প্রথম থেকেই দেখেছি স্যার কতটা ভালো মানুষ। স্যার সব সময় আমাদের সহযোগিতা করতে যে কোন বিষয়ে। বিভাগীয় প্রধান হয়েও স্যার ছিলেন একেবারেই সহজসরল মানুষ। স্যারের অকাল মৃত্যুতে আমরা মাগফিরাত কামনা করছি।
সর্বশেষ প্রয়াত সাইফুল স্যারের ছোট ভাই জাহিদুল ইসলাম বলেন- আমার জীবনের যত অর্জন সব কিছুর পিছনেই ভাইয়ের অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। ভাই আমার উপর ছায়ার মতো ছিল বলেই আমি এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। ভাইদের মধ্যে থেকে সাইফুল ভাইয়ের সাথেই ছিল আমার সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক। ছাত্র জীবনে ভাইয়ের বাসায় থেকে পড়াশোনা করেছি। ভাইকে নিজ চোখে দেখেছি। ভাই ছিলেন আমার জীবনে একটা স্পিড, যার অনুপ্রেরণা স্নেহময়তার আগলে ছিলাম সব সময়। ভাইয়ে হারিয়ে আমি হয়ে গেছে একেবারেই শূন্যে। সবাই আমার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন।
এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য দিয়েই প্রয়াত অধ্যাপক সাইফুল হক স্যারের স্মরণে শোকসভা শেষ হয়।
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com