ফাহিম মোল্লা,  চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি।।

ঘরে স্ত্রী সন্তান রেখে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ (হিজড়া) সেজে প্রতারণা ও অশ্লীলতাসহ চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে মোঃ ছালাউদ্দিন (৩০) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে।

যুবক ছালাউদ্দিন ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার শশীভূষণ থানার  চর-কলমি ইউনিয়ন ৪ নম্বর ওয়ার্ড চর-মঙ্গল গ্রামের মোঃ মুনাফ চারপাশির ছেলে।

জানা যায়,মোঃ ছালাউদ্দিন নামের এই যুবক ঘরে স্ত্রী সন্তান রেখে পুরুষ হয়েও নারী হিজড়া সেজে সানি নাম ব্যবহার করে নিজ এলাকা চরফ্যাসন উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে হাটবাজারে মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি ও প্রতারণা করণসহ অশ্লীলতা এবং ব্ল্যাকমেইল করে টাকাপয়সা হাতিয়ে নেন।

এছাড়াও সুস্থ যুবকদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে হিজড়া সাজিয়ে তাদের দিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানান অপকর্মের মাধ্যমে হাতিয়ে নেন টাকা।

তার নিজ গ্রাম চর-কলমি ইউনিয়নের চৌমুহনী বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান , ছালাউদ্দিন কয়েক বছর আগেও চৌমুহনী বাজারে সেলুনের কাজ করতেন পরে আবার একই বাজারে দর্জি কাজ করতেন।

কিন্তু হটাৎ ঢাকা গিয়ে মেয়েদের পোষাক পরে এলাকায় এসে নিজেকে হিজড়া দাবি করে চাঁদাবাজিসহ নানান অপকর্ম করে আসছেন ছালাউদ্দিন।

স্থানীয়দের দাবি তার চরফ্যাসন উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে বিভিন্ন কায়দায় টাকা হাতিয়ে আনেন অভিযুক্ত ছালাউদ্দিন। সম্প্রতি তার সাথে থাকা পরি নামের এক হিজড়া দাবী করেন তাকে দিয়ে যৌনতার কাজ করিয়েছেন অভিযুক্ত ছালাউদ্দিন।এসব অনৈতিক কাজ করতে না চাইলে শারীরিক নির্যাতন করতেন বলেও জানান পরী। তিনি আরো জানান, শুধু সে নয় এছাড়াও একাধিক হিজড়াকে দিয়ে অবৈধভাবে দেহ ব্যবসা করানোর পাশাপাশি বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষকে কৌশলে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন ছালাউদ্দিন।

অভিযুক্ত ছালাউদ্দিন এর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সাজানো গোছানো বাড়ি-ঘর, স্ত্রী, এক মেয়ে ও একছেলে আছে তার।

স্ত্রী জান্নাত বেগমের সাথে কথা বল্লে তিনি জানান, দীর্ঘ চার বছর ধরে তার স্বামী হিজড়াদের বেশ ধরে আছে এবং এই চার বছর তার সাথে কোন রকম যোগাযোগ নেই, যদিও তার এমন কথার সত্যতা মেলেনি। কারণ তার মেয়ের সাথে কথা বল্লে তিনি বলেন,তার বাবা দুই চার দিন পর পরই আসেন বাড়িতে। ছালাউদ্দিনের কর্মকান্ড ইসলামী শরীয়তের বিরুদ্ধে এবং সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বলেও দাবি করেন স্থানীয়রা। এমন ঘটনায় এর আগেও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় গণমাধ্যম কর্মীরা সংবাদ প্রকাশ করলেও তেমন কোন সুফল মেলেনি। অভিযুক্ত ছালাউদ্দিন স্ত্রী সন্তানের রয়েছে বলে স্বীকার করে বলেন, আমাকে এই পথে এনেছে চরফ্যাশন উপজেলার হিজড়াদের সভাপতি মাধুবি।

এছাড়াও একাধিক হিজরা অভিযোগ করে বলেন, সালাউদ্দিন ওরফে সানির বাড়িতে স্ত্রী সন্তান রেখে পুরুষ হয়েও তিনি হিজড়া সেজে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন অবৈধ কাজের সাথে লিপ্ত । তাই প্রকৃত হিজড়াদের সন্মান ক্ষুন্ন করছেন বলে দাবি। খুব শিগগিরই প্রশাসন এ বিষয়টি নজরে এনে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন এমনটাই আশা করছেন হিজরা সম্প্রদায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নওরীন হক জানান, শুনেছি ছালাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি ঘরে বউ ছেলে মেয়ে রেখে নিজে হিজড়া সেজে অন্য হিজড়াদের দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে।দ্রুত সময়ের মধ্যে থানা পুলিশের সহযোগিতায় তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।