বরগুনা প্রতিনিধি:
বরগুনায় একটি অসহায় পরিবারের বসতবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং ন্যায়বিচার প্রাপ্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
শুক্রবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বরগুনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ভুক্তভোগী পরিবারের কলেজ শিক্ষার্থী আয়শা লিমা।
লিখিত বক্তব্যে আয়শা লিমা জানান, সদর উপজেলার পূর্ব সুপ্তি মনসাতলী গ্রামের বেল্লাতের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে বসতবাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন তারা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নির্মাণকাজ শুরুর পর স্থানীয় প্রভাবশালী খলিল নামের এক ব্যক্তি পুলিশ নিয়ে এসে কাজ বন্ধ করে দেন এবং থানায় উভয় পক্ষকে জমির কাগজপত্রসহ হাজির হতে বলেন। ভুক্তভোগী পরিবার নির্ধারিত সময়ে থানায় গেলেও প্রতিপক্ষ অনুপস্থিত থেকে লোকজন নিয়ে নির্মাণাধীন বাড়ি ভাঙচুর করে, ঘরের মূল্যবান মালামাল লুট করে এবং ব্যাংক থেকে উত্তোলনকৃত চার লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
আয়শা লিমা অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার রাতে পুলিশকে জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। পরদিন সকালে দুই আসামিকে আটক করলেও সেনাবাহিনীতে কর্মরত প্রভাবশালী খলিলের বড় ছেলে সুমন শেখ ও আশরাফ আলীর ছেলে রাসেল কর্নেল পর্যায়ের এক কর্মকর্তার প্রভাব খাটিয়ে নৌবাহিনীর সহায়তায় তাদের ছাড়িয়ে নেয়।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে একজন দারোগাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং পুনরায় কাজ শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়। কাজ পুনরায় শুরুর পর অতিবৃষ্টির কারণে কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকার সুযোগে সন্ত্রাসীরা আবারও হুমকি দিতে শুরু করে। মা-মেয়েদের গণধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়। ইউএনও বিষয়টি নিজে তদন্ত করে লিখিতভাবে খলিল ও তার ছেলেদের সতর্ক করলেও হুমকি থামেনি।
১ জুলাই আয়শা লিমা ও তার বোন পরীক্ষা দিতে গেলে বাড়িতে একা থাকা মায়ের ওপর আবারও হামলা চালানো হয়। নির্মাণাধীন বাড়ির রড, সিমেন্টসহ গাঁথুনি ভেঙে লুট করে নিয়ে যায়। অভিযোগ করতে গেলে সদর থানার পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ না করে রহস্যজনক ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে আয়শা লিমা দাবি করেন, তাদের বৈধ জমির নিরাপত্তা ও মালিকানা নিশ্চিত করতে হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ও পক্ষপাতিত্বপূর্ণ আচরণের তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং নারী সদস্যদের হুমকির বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।
এ বিষয়ে পূর্ব ধুপতি গ্রামের মৃত হাসেম শেখের পুত্র মোঃ আবুল কালাম বাদী হয়ে নয়জনকে আসামি করে পুলিশ সুপার বরাবরে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী পরিবারের মোঃ আবুল কালাম, কলেজ শিক্ষার্থী হাফছা আক্তার চাঁদনী এবং জমি বিক্রেতা বেল্লাত প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :