লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে মালামাল পরিবহনের জন্য নছিমন গাড়ি ভাড়া নিয়ে টাকা কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
প্রায় লক্ষাধিক টাকা কম দিয়ে লোপাট করেছেন এর সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বরাদ্দকৃত টাকার অর্ধেকেরও কম দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন চালকরা। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একে অপরের ওপর দায় চাপিয়ে দিচ্ছেন। অভিযোগে জানা যায়, গত বছরের ২৮ নভেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন উপলক্ষে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নানের বরাদ্দকৃত টাকা প্রদানের আশ্বাসের ভিত্তিতে ভোটগ্রহণের দুইদিন আগেই ৯১টি নছিমন গাড়ি সরবরাহ করেন সংশ্লিষ্ট চালকরা। কিন্তু নির্বাচন শেষে ২৮ নভেম্বর রাতে ৯১টি গাড়ির বিপরীতে ৯১ হাজার ৩০০ টাকা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা (ভোটমারী ও মদাতী ইউনিয়ন) জাকির হোসেনের মাধ্যমে চালকদের দেওয়া হয়। এতে চালকরা আপত্তি জানালে নানা অজুহাতে বিষয়টি এড়িয়ে চলে যান জাকির হোসেন।
এছাড়া পরবর্তীতে ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের পুন:নির্বাচনে ১১টি গাড়ির জন্য ১১ হাজার টাকা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে চালকদের দেওয়া হয়। কিন্তু নির্বাচন শেষে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও বরাদ্দকৃত বাকি টাকা পাননি নছিমন চালকরা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাচনী সরঞ্জাম সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে পরিবহনের জন্য ভ্যাট বাদে গাড়ি প্রতি ভাড়া বরাদ্দ ২ হাজার ৫০০ টাকা। অন্যান্য উপজেলায় ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া প্রদান করা হলেও কালীগঞ্জ উপজেলায় প্রতিটি নছিমন গাড়ি বাবদ মাত্র ১ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নছিমন চালক- মালিক সমিতির কালীগঞ্জ উপজেলা সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে গাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান মহোদয় আশ্বস্ত করেছিলেন যে, বরাদ্দকৃত টাকা প্রদান করা হবে। সে অনুযায়ী ভোটগ্রহণের দুইদিন আগে ৯১টি গাড়ি সরবরাহ করি। কিন্তু ভোটগ্রহণ শেষে গাড়িপ্রতি ১ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও কেউই কোনো সাড়া দেননি। উল্টো একে অপরের ওপর দায় চাপিয়ে দিয়ে হয়রানি করেছেন। জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ভ্যাট বাদে গাড়ি প্রতি সরকারি বরাদ্দ ২ হাজার ৫০০ টাকা। পাশ্ববর্তী উপজেলাগুলোতে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া দেওয়া হয়েছে। কালীগঞ্জে টাকা কম দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহাবুবা রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও কোনো প্রতিউত্তর পাওয়া যায়নি।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা সোয়া একটার দিকে আবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা জাকির হোসেন সরকার বলেন, ইউএনও স্যারের মধ্যস্থতায় টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে ইউএনও’র সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি। টাকা কম দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, বিষয়টি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তরা জানেন, তারাই বলতে পারবেন।
আপনার মতামত লিখুন :