মৌ-খামারীদের মধু সংগ্রহ করে বদলে যাচ্ছে ভাগ্যের চাকা


মেহেদী হাসান তানিম নাটোর প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১২, ২০২১, ১০:২৯ অপরাহ্ণ /
মৌ-খামারীদের মধু সংগ্রহ করে বদলে যাচ্ছে ভাগ্যের চাকা
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। মাঠের পর মাঠ জুড়ে বিরাজ করছে থোকা থোকা হলুদ ফুলের দৃষ্টিনন্দন মনো মুগ্ধ কর দৃশ্য। এ সুযোগে মৌ-খামারীরা খেতের পাশে সারিবদ্ধ ভাবে মৌ বক্স বসিয়েছেন। সেখান থেকে দলে দলে মৌ-মাছির ঝাঁক বসছে সরিষার হলুদ ফুলে। একদিকে মৌ মাছির মাধ্যমে পরাগায়ন ঘটছে সরিষা উৎপাদন যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে অন্যদিকে মৌ-খামারীরা মধু সংগ্রহ করে বদলে যাচ্ছে তাদের ভাগ্যের চাকা।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিস সুত্রে জানা গেছে,এ বছর উপজেলায় ৭৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। শষ্য বহুমুখী করণে কৃষকদের সরিষা চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রায় চেয়ে অধিক সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন।
সরোজমিন গুরুদাসপুর উপজেলার বিলশা, রুহাই ও বামনবাড়িয়া গ্রামে গিয়ে দেখাগেছে, বিস্তৃত মাঠে সরিষা ফুলে ফুলে মৌমাছির গুঞ্জন। খেতের পাশেই মৌ-খামারীরা বাক্স পেতে বসেছেন। মৌ মাছিগুলো সরিষাফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বাক্সের ভেতর ঢুকছে আর বের হচ্ছে বিলশা ও রুহাই গ্রামে সরিষার ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করতে এসেছেন নাজিরপুর ইউনিয়নের জুমাইনগর গ্রামের মৌচাষি সানোয়ার হোসেন জানান, তার ১৪০টি মৌবাক্স রয়েছে। সেখান থেকে সপ্তাহে ৮ মন মধু সংগৃহীত হয়। তিনি ছাড়াও আরো ২ জন শ্রমিক নিয়োজিত আছে। মধু থেকে তাঁর সাপ্তাহিক আয় ৪৮ হাজার টাকা হলেও খরচ ১৬ হাজার টাকা। তার সাপ্তাহিক আয় প্রায় ৩২ হাজার টাকা।
একই ইউনিয়নের মোল্লা বাজার গ্রামের মৌচাষি বেলাল হোসেন জানান,তাদের উৎপাদিত মধুগুলো এপি,ডাবর,কম্বোসহ দেশীয় বিভিন্ন কো¤পানী ৬-৭ হাজার টাকা মন হিসাবে পাইকারী কিনে নেন। ডিসেম্বর মাসজুড়ে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগৃহীত হয়ে থাকে। তার মতো এ উপজেলার অন্তত ৪০ জন মৌচাষি এ পেষার সাথে যুক্ত।
উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়নের বিলশা গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন জানান,স্বল্প সময়ে সরিষার ফসল ঘরে তুলে একই জমিতে বোরো ধান চাষ করা যায়। একারেন সরিষা চাষ করে থাকি। এ বছর তিনি ৬ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। সরিষার গাছ যে সুন্দর দেখা যাচ্ছে তাতে সরিষার বা¤পার ফলন হবে। রুহাই গ্রামের কৃষক আতিকুর রহমান বলেন, তিনি ১০ বিঘা জমিতে শরিষা আবাদ করেছেন।এ বছর চলনবিল থেকে দ্রুত বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার কারনে তার মতো এলাকার অধিকাংশ কৃষক সরিষার আবাদ করেছেন। অল্প সময়ে এ ফসল ঘরে তুলে বোরো আবাদ করা যায় বলে আমরা সরিষা চাষ করছি।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশীদ জানান, গুরুদাসপুর উপজেলায় ৭৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে। ভোজ্য তেল ও শরিষার বাজারদর বেশি থাকায় শরিষা চাষে কৃষকের আগ্রহ বেশি। একরনে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চাষ ও উৎপাদন দুটোই বাড়বে। আর সরিষা ফুল কেন্দ্রিক মধু সংগ্রহে কৃষক ও মৌ-খামারীরা উভয়েই লাভবান হচ্ছে।
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com