বেলকুচিতে পানির নিচে কৃষকের স্বপ্ন, ২৮শ’ বিঘা জমির ফসলের ক্ষতি 


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় : মে ৩১, ২০২০, ৬:৩০ অপরাহ্ণ /
বেলকুচিতে পানির নিচে কৃষকের স্বপ্ন, ২৮শ’ বিঘা জমির ফসলের ক্ষতি 
সবুজ সরকার, বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উজান থেকে ধেয়ে আসা অকাল বন্যায় তলিয়েছে কৃষকের হাজার হাজার একর বোরো ধানসহ পাট, চিনা ও সবজির ক্ষেত। গত এক সপ্তাহে উজানের জেলাগুলোতে অসময়ে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট এই বন্যায় একই সাথে পানির নিচে ডুবেছে কৃষকের স্বপ্ন। এতে এ উপজেলায় প্রায় ২৮শ’ বিঘা আবাদি জমির বোরো ধান, পাট, চিনাসহ সাক-সবজির ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তরিঘরি করে ধান ঘরে তুলতে দ্বিগুন মুজুরি দিতে হচ্ছে কৃষকের। সরকারের সহায়তা চেয়েছেন প্রান্তিক কৃষক।
 
 
রবিবার (৩১ মে) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যমুনা তীরবর্তী এ উপজেলার বেলকুচি পৌরসভা, সদর, রাজাপুর ও বড়ধুল ইউনিয়ের প্রায় ২৮শ’ বিঘা জমির পাট, চিনা ও সবজিসহ পাকা ও অর্ধ-পাকা বোর ধানের ক্ষেত পানিতে ডুবেছে। 
 
 
কৃষকরা জানান, আর মাত্র ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে ধান গুলো কাঁটার উপযুক্ত হতো। কিন্তু সে সুযোগ আর হলো না। অতীতে আমাদের অঞ্চলে এরকম ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সম্প্রতি নিচু এলাকায় বোরো মৌসুমে ধান কাঁটার আগেই পানি চলে আসছে। ফলে আমাদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকারের সহায়তা চেয়েছেন এসব প্রান্তিক কৃষক।
 
সদর ইউনিয়েনের সোরহাব নামের এক কৃষক বলেন, সারা বছর আমাদের ভাতের ব্যবস্থা হয় এই ফসল থেকে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এমনিতেই জীবিকা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। সেই চিন্তা আরো বেড়ে গেল।
 
বড়ধুল ইউনিয়নের আব্দুস সালাম নামের এক কৃষক জানান, আমাদের অনেকে কৃষি ঋণের মাধ্যমে চাষাবাদ করেছি। এ বছর ফলন ভালো হয়েছিল। তাই ভেবেছিলাম, ঋণ পরিষোধ করতে পারব কিন্তু সে আর হলো না। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কি খাব সেই চিন্তায় আছি!
 
সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর্জা সোলায়মান হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার ইউনিয়ন এমনিতেই চর এলাকা, গরিব মানুষ বেশি। এসব গরিব মানুষের ধান অকাল বন্যায় ক্ষতি হয়ায় তাদের ঋণ দেয়া কষ্ট হবে। বন্যা পরবর্তীতে পনোদনা দেয়া দরকার। 
 
বড়ধুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের উদ্দিন বলেন, এ রকম ভাবে বন্যা হয় আগে কখনও দেখিনি। এ বন্যায় কারণে কৃষকরা অতিরিক্ত মুজুরি দিয়ে ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছে। 
 
ক্ষতির বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্যাণ প্রসাদ পাল এই প্রতিবেলককে বলেন, হঠাৎ বর্ষা দেখা দেওয়ায় উপজেলাতে এ পর্যন্ত ২৮শ’ বিঘা জমির আবাদি ফসল পানিতে নিমর্জিত হয়েছে।  ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরি করে কৃষি অধিদপ্তরে প্রেরণ করবো। অন্যান্য বছরে সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের সহায় করে আসছে। আশা করছি এ বছরে সরকার কৃষকদের প্রতি সুদৃষ্টি রাখবেন। তাহলে কৃষকেরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তা অনেকটা পুষিয়ে উঠতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
 
কৃষকদের সহাযতার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত-ই-জাহান নুর  বলেন, আমরা প্রান্তিক পর্যায়ে যে সকল কৃষক বর্নার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করছি।  তালিকা তৈরি কাজ শেষ হলে তা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এর ফলে যদি কৃষকদের  কোন প্রনোদনা আসে তবে তা কৃষকদের মধ্যে বন্টন করা হবে।
Attachments area
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com