চার শর্তে নির্বাচনে যেতে পারে বিএনপি


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩, ৩:২৫ পূর্বাহ্ণ /
চার শর্তে নির্বাচনে যেতে পারে বিএনপি
বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বলা হয়েছে যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যদি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে না হয় তাহলে তারা অংশগ্রহণ করবে না। এই দাবিতে বিএনপি বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করছে। যদিও এই কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত জনগণের সম্পৃক্ততা নেই। এ ধরনের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সরকারকে চাপে ফেলা যাবে বা সরকারের পতন ঘটানো যাবে—এমনটি নেতারাও বিশ্বাস করে না। বরং আন্তর্জাতিক মহল থেকে এখন বিএনপিকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে তারা যেন নির্বাচন বর্জনের পথে না গিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে—এমন গ্যারান্টি দিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো বিএনপিকে নির্বাচনে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে কোনো রকম সমঝোতা ছাড়াই যদি বিএনপি নির্বাচনে যায় তাহলে সেটা বিএনপির জন্য আত্মঘাতী হবে। অনেকটা নাকে খত দেওয়ার মতো ব্যাপারে পরিণত হবে। এটি বিএনপির নেতারা চাচ্ছেন না। এর ফলে বিএনপির নির্বাচনে ভরাডুবি শুধু নিশ্চিত হবে না বরং জনগণের সামনে বিএনপি একটি হাস্যকর দলে পরিণত হবে। আর সে কারণে নির্বাচনে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি সম্মানজনক সমঝোতা চায়। এমন একটি পথ চায় যেখানে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়াটাকে জনগণ যৌক্তিক মনে করবে। এক্ষেত্রে বিএনপি বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছে।
একাধিক কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে যে, বিএনপির পক্ষ থেকে যে সমস্ত শর্তগুলো বিভিন্ন দূতাবাসে দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে;

১. বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি: নির্বাচনে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির প্রধান এবং অন্যতম শর্ত হলো বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে হবে। কোন শর্তের বেড়াজালে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিকে প্রলম্বিত করা যাবে না। এর সাথে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়াকেও সম্পর্ক যুক্ত করা যাবে না।
২. তারেক জিয়ার মামলা প্রত্যাহার এবং নির্বিঘ্নে দেশে ফেরার সুযোগ করে দেওয়া: বিএনপির দ্বিতীয় দাবি হচ্ছে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে তাদের ভাষায় যে হয়রানিমূলক মামলা এবং দন্ডগুলো রয়েছে সেগুলো স্থগিত করতে হবে। নির্বাচনের আগে তাকে বাংলাদেশে সম্মানজনক ভাবে এবং ঝামেলা মুক্ত ভাবে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এটি না করা হলে তাদের পক্ষে নির্বাচনে যাওয়া কঠিন হবে এমনটি তারা বলছে।

৩. প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিত করতে হবে: নির্বাচনের সময় অর্থাৎ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিত করতে হবে বা তাকে দপ্তর বিহীন মন্ত্রী হিসাবে রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী তার নিজ নির্বাচনী এলাকা ছাড়া সরকারের প্রটোকল ব্যবহার করে অন্য কোনো নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার জন্য যেতে পারবেন না।
৪. সকল দলের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা: শুধুমাত্র যারা জাতীয় সংশ্লিষ্ট আছে তাদের মধ্যে থেকে নয় বরং প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো থেকেও নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী করতে হবে। সেক্ষেত্রে একটি সমঝোতা প্রয়োজন। এছাড়াও একটি নিরপেক্ষ উপদেষ্টা মন্ডলী গঠন করতে হবে। যারা আসলে নির্বাচনকালীন সরকারের মূল ক্ষমতার প্রয়োগ করবে এবং অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দেবেন। এছাড়াও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষ অবস্থানের নিশ্চিয়তা চায় বিএনপি। এছাড়াও বিএনপির পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিদেশি পর্যবেক্ষকদের যেন অবাধে এবং নিরপেক্ষ ভাবে পর্যবেক্ষণ করার অনুমতি দেওয়া হয় সেই প্রস্তাবও করা হয়েছে। তবে এই সব প্রস্তাব নিয়ে কোন মহলে কোন আলোচনা হয়েছে এমন কোন খবর পাওয়া যায় নি।

বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা এই ধরনের প্রস্তাবের কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তারা বলেছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে কোনো ধরনের পিছু হটার কোনো সম্ভাবনাই নেই।
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com