বিদ্যালয়ের বদলে মেঘনায় শিশু শ্রম


dailymukti24 প্রকাশের সময় : ২০২৫-০৮-২৫, ১:১৮ PM / ৮৮
বিদ্যালয়ের বদলে মেঘনায় শিশু শ্রম

এম ফাহিম | চরফ্যাসন (ভোলা)

ভোলার চরফ্যাসনে দারিদ্র্যের তাড়নায় প্রায় তিন হাজার শিশু প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে মেঘনা নদীতে মাছ ধরছে। সাত থেকে চৌদ্দ বছর বয়সী এসব শিশু পড়াশোনার পরিবর্তে পরিবারের আয়-রোজগারে সহায়তা করছে।

আসলামপুরের শিশু হাসিব (১১) ও হারিচ (১৪) ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে মাছ ধরছে। তাদের বাবা ফারুক মাঝি জানান, পরিবারের ছয়জনের ভরণপোষণ একা সম্ভব নয়, তাই ছেলেদের নিয়েই নদীতে নামতে হয়।

শুধু মাছ ধরা নয়, শিশুরা বাবুর্চির সহকারী, জাল টানা ও মাছ বাছাইয়ের কাজেও যুক্ত হচ্ছে। চর মাদ্রাজের ট্রলারমালিক লোকমান হোসেন বলেন, অভাবের কারণে শিশুরা নৌকা ও ট্রলারে নানা কাজে যুক্ত হচ্ছে।

উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, চরফ্যাসনে প্রায় এক লক্ষ জেলে রয়েছে। এর মধ্যে নিবন্ধিত ৪৪ হাজার ১০৫ জন, আর সাগরগামী জেলে ১৭ হাজার ৫৬১ জন। অনেক শিশু অল্প বয়সেই দক্ষ মাঝি হয়ে ওঠে।

সামরাজ মৎস্যঘাটের জেলে ইমন বলেন, “আমাদের ছেলেদেরও মাছ ধরতেই হবে। লেখাপড়া করানোর সামর্থ্য নেই।” স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মনে করেন, আর্থিক অনটন ও অভিভাবকদের সচেতনতার অভাব শিশুদের স্কুল থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, সরকারি উপবৃত্তি ও বিনামূল্যের বই থাকা সত্ত্বেও শিশুরা স্কুলে যায় না। অনেক শিশুর নাম স্কুলের খাতায় থাকলেও তারা সময় কাটায় নদীতে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, দারিদ্র্যের কারণে শিশুরা জেলে পেশায় যুক্ত হচ্ছে। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মামুন হোসেন জানান, শিশুজেলেদের বিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত করা গেলে তাদের উপবৃত্তির আওতায় আনা হবে।