ইউপি চেয়ারম্যানকে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন এক নারী


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১৪, ২০২৪, ৪:৪৭ পূর্বাহ্ণ /
ইউপি চেয়ারম্যানকে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন এক নারী

রেজাউল করিম আলআমিন,বরগুনা জেলা প্রতিনিধি

বরগুনার তালতলী উপজেলার একাধিক জন প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে গোপন ভিডিও আছে বলে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য এবং ফাঁসানোর জন্য চেষ্টা চালিয়েছেন ইসরাত জাহান লামিয়া নামের এক নারী।

এ ঘটনার ভুক্তভোগী নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু বাদী হয়ে গত শুক্রবার রাতে তালতলী থানায় একটি পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ।
ঘটনার অভিযোগে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখা দুই জনকে আটক করেছে। মামলার আসামী হলেন ইসরাত জাহান লামিয়া (দক্ষিণ আমতলী) জাহিদুল ইসলাম সবুজ ফকির
( চন্দনতলা, ছোটবগী)

ঘটনার স্বাক্ষীরা হলেন, উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আঃ রাজ্জাক হাওলাদার, উপজেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি মিনহাজুল আবেদীন মিঠু, সজিব খান সাং চন্দনতলা ও শহীদ হাওলাদার সাং চন্দনতলা।

মামলার বিবরণে বাদী উল্লেখ করেন, ঘটনার প্রায় এক বছর পূর্বে অভিযুক্ত নারী ইশরাত তার মোবাইল ফোনের হোয়ার্টস অ্যাপে আমাকে কল করে। প্রথমে আমি তার ফোন না ধরলেও পরবর্তীতে ধরলে ঐ নারী আমাকে বলে আমার এক পরিচিত লোক মনে করে ভুলবশত আপনার ফোনে কল চলে গেছে। এসময় নারী পরিচয় দেন তিনি বরিশালে থাকেন এবং ঢাকায় একটি ভার্সিটিতে এল এল বি পড়াশোনা করেন।

পরিচয়ের কয়েকদিন পর ঢাকায় কাজের জন্য গেলে ১নং আসামি আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে আমরা ঢাকার একটি রেষ্টুরেন্টে দেখা করি। তারপর থেকে আমার কাছে ১ নং আসামি হোয়াটসঅ্যাপে কল করতো এবং কুশলাদি বিনিময় করতো, যার ফলে আমাদের মধ্যে একটি সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের অনেক দিন পর অফিসিয়াল কাজ শেষে ঢাকা থেকে ফেরার পথে পারাবত লঞ্চ যোগে বরিশাল ফেরার কথা সে জানতে পেরে আমার কেবিনের পাশে সেও কেবিন করে। একসময় সে আমার কেবিনে প্রবেশ করে এবং রাতে কিছুই খায়নায় বলে আমকে জানায়।

সরল বিশ্বাসে বাদী তার কেবিনে বসে দুই জনের জন্য খাবার অর্ডার করেন এবং একসঙ্গে খানাপিনা করে। খাবার পরে ১নং আসামিকে তার কেবিনে বাদী যেতে বললে সে সুকৌশলে তার কেবিনে শুয়ে পরে।

একপর্যায়ে আসামি তার কৌশলে তার মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় বাদীকে জড়াইয়া ধরে গোপন ভিডিও ধারণ করে।

বাদী তার এজাহারে আরো উল্লেখ করেন, আসামি সুকৌশলে আমার সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে পরবর্তীতে তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনুর হোয়াটসআ্যপ থেকে গত বছরের ২৮ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় আমার হোয়াটসঅ্যাপে দেয়।
একইসঙ্গে এই মামলার সাক্ষী পচাকোড়ালিয়া চেয়ারম্যান আঃ রাজ্জাক হাওলাদার ও উপজেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর একই নারীর করা দুটি ভিডিও আমার হোয়াটসঅ্যাপে দিয়ে বলে, আমার বড় ভাই মনিরুজ্জামান মিন্টুর পক্ষে উপজেলা নির্বাচন না করলে তোমাদের ভিডিও ইন্টারনেটে ছাড়িয়া দিব। এ সময় তিনি মোটা অংকের টাকাও দাবি করে।

এ ঘটনায় তালতলী থানার ইন্সপেক্টর রনজিৎ কুমার বলেন গত শুক্রবার রাতে এই ঘটনায় পর্নোগ্রাফি আইনের ৮(১)(২)(৩)(৫) এর (ক) (৭) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তালতলী থানার মামলা নং ( ৪)তারিখ ১২/৪/২০২৪।
মামলাটি অতিসত্বর তদন্তের জন্য বরগুনা জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখায় প্রেরণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বশির আলম বলেন, আমরা এক অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে গেলে সমাজের বিভিন্ন জন প্রতিনিধি সহ রাজনৈতিক নেতাদের গোপনে ষড়যন্ত্রমূলক আপত্তিকর ভিডিও করার পেন ড্রাইভ উদ্ধারকরি।

এ ঘটনায় জড়িতদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসি। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আটককৃতরা (১৬৪) দ্বারা জবানবন্দিতে তাদের ষড়যন্ত্রের সকল দোষ স্বীকার করে। এঘটনায় ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন বাদী হয়ে তালতলী থানায় মামলা দায়ের করে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে মামলাটি ডিবিতে প্রেরন করা হয়েছে, বর্তমানে বিধি মোতাবেক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com