গরমে রোগ-ব্যাধি ও করণীয়


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় : মে ৩০, ২০২৩, ৯:৩২ অপরাহ্ণ /
গরমে রোগ-ব্যাধি ও করণীয়

শীতকালের প্রস্থান হলো, যদিও রাত হলে তার আমেজ এখনো কিছুটা বোঝা যায়। দিনের বেলাটা এখন বেশ গরমই থাকে। ঋতুর এই পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের স্বাস্থ্যের পরিবর্তন বা রোগব্যাধি হওয়াটাই স্বাভাবিক। এর প্রভাবে চারদিকে চলছে কিছু কিছু রোগ বালাই আর স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা। এগুলো থেকে পরিত্রাণের জন্য আমাদের সবাইকে হতে হবে সচেতন, নিতে হবে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা।

এগুলো বেশিরভাগই ভাইরাসজনিত, লক্ষণভিত্তিক কিছু চিকিৎসা, এমনকি কোনো চিকিৎসা ছাড়াই ভালো হয়, কোনো অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না। তবে শুকনা কাশিটা কয়েক সপ্তাহ ভোগাতে পারে। ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ, এর সঙ্গে এন্টিহিস্টামিন খেতে হবে। আর গরম পানিতে গড়গড়া করতে হবে। গরম গরম চা বা গরম পানিতে আদা, মধু, লেবুর রস, তুলসি পাতার রস ইত্যাদি পান করলে উপকার পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে ভাইরাসের পরপরই ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে। কাশির সঙ্গে হলুদ বা সবুজ রংয়ের কফ বের হলে এবং সঙ্গে জ্বর থাকলে ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয়।

এই সময়টাতে আরও একটি ভাইরাস রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায় যাকে বলে সিজনাল ফ্লু। এই রোগের লক্ষণগুলোও কমন কোল্ডের মতোই। আলাদা কোনো চিকিৎসারও প্রয়োজন হয় না, উপরের কমন কোল্ডের মতোই উপসর্গ ভিত্তিক চিকিৎসা দিলেই ঠিক হয়ে যায়। জলবসন্ত হলে প্রথমে একটু জ্বর, শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা আর সর্দি দেখা দেয়। তারপর গায়ে ফোস্কার মতো ছোট ছোট দানা ওঠে, সঙ্গে থাকে অস্বস্তিকর চুলকানি, ঢোক গিলতে অসুবিধা, অরুচি ইত্যাদি। এটাও কোনো মারাত্মক অসুখ নয়। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল, শরীর চুলকালে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ, ক্যালামিন লোশন ইত্যাদি ব্যবহার করলেই রোগের প্রকোপ কমে আসবে। আর সংক্রমণ হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বসন্তে গাছে গাছে থাকে হাজারও ফুলের সমাহার, আর তার সঙ্গে বাতাসে ভেসে বেড়ায় ফুলের পরাগরেণু। এসব রেণু অ্যালার্জেন হিসেবে কাজ করে। অ্যালার্জিজনিত অ্যাজমা বা হাঁপানির অন্যতম কারণ এই পরাগ রেণু। এই সময় বাতাসে অ্যালার্জেন বেশি থাকায় হাঁপানি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিসসহ অন্যান্য অ্যালার্জিজনিত রোগের প্রকোপও বেড়ে যায়। তাই এই পরাগরেণু এড়িয়ে চলাই ভালো। প্রয়োজনে মুখে মাস্ক ব্যবহার করা ভালো, বিশেষ করে যাদেরকে বাইরে বেশি কাজকর্ম করতে হয়। সাইনোসাইটিস এবং টনসিলাইটিস জাতীয় রোগগুলোও এই সময়ে দেখা দিতে পারে। ঋতু পরিবর্তন চিরন্তন। সময়ের সঙ্গে আসবে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত আর বসন্ত। আর এর সঙ্গে একেক ঋতুতে একেক রোগব্যাধির প্রকোপও দেখা দেবে। তাই সুস্থ থাকার জন্য ঋতুভেদে কিছু সহজ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ, সাবেক ডিন ও চেয়ারম্যান, মেডিসিন অনুষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com