সুদ—ইসলামে হারাম, সমাজে বিষ


dailymukti24 প্রকাশের সময় : মে ২, ২০২৫, ৭:১৬ পূর্বাহ্ন /
সুদ—ইসলামে হারাম, সমাজে বিষ

অনলাইন ডেস্ক:- সুদ বা রিবা—শুধু একটি আর্থিক লেনদেন নয়, বরং ইসলামের দৃষ্টিতে এটি একটি মারাত্মক গুনাহ। কুরআন ও হাদিসে সুদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারিত হয়েছে। সুদ একদিকে যেমন ব্যক্তিগত জীবনে অশান্তি আনে, তেমনি সমাজে সৃষ্টি করে বৈষম্য, নিপীড়ন ও ধ্বংস।

সুদ সম্পর্কে কুরআনের বাণী:

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন:

> “যারা সুদ খায়, তারা কবর থেকে উঠবে ঠিক তেমনি, যেমন শয়তান দ্বারা স্পর্শকৃত পাগল ওঠে।… আল্লাহ সুদকে করেছেন হারাম এবং বেচাকেনাকে করেছেন হালাল।”
— সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২৭৫

আরও বলা হয়েছে—

> “হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং যদি তোমরা সত্যিকারের মুমিন হও, তবে সুদের যা বাকি আছে তা ছেড়ে দাও। যদি তা না কর, তবে জেনে রাখো, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধ ঘোষণা করা হলো।”
— সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২৭৮-২৭৯

সুদ সম্পর্কে হাদিসের সতর্কবাণী:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

> “আমি সুদ গ্রহণকারী, সুদ প্রদানকারী, সুদের হিসাবকারী ও সাক্ষী—সবার ওপরই লা’নত করেছি।”
— সহীহ মুসলিম, হাদীস: ১৫৯৮

তিনি আরও বলেন:

> “এক দিরহাম সুদ কেউ খেলে, তা ৩৬ বার ব্যভিচার করার চেয়েও গুরুতর।”
— মুসনাদে আহমদ

সুদ কীভাবে সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করে:

সুদগৃহীত অর্থের মাধ্যমে ধনীরা আরও ধনী হয়, আর দরিদ্ররা হয়ে পড়ে আরও অসহায়।

সমাজে আর্থিক ভারসাম্য নষ্ট হয়, বেড়ে যায় বৈষম্য।

সুদের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা অর্থনীতি হয় শোষণনির্ভর ও অস্থির।

মানুষের হৃদয় থেকে রহমত উঠে যায়; থাকে না শান্তি ও বরকত।

সুদ গ্রহণকারীর শাস্তি:

আল্লাহ ও রাসূলের পক্ষ থেকে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা—এটি সবচেয়ে ভয়াবহ শাস্তির হুঁশিয়ারি।

কিয়ামতের দিনে তার অবস্থা হবে বিকৃত, ভীতিকর।

দোয়া কবুল হয় না, আমল গ্রহণযোগ্য হয় না।

আখিরাতে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

ইসলামে সুদ শুধু নিষিদ্ধ নয়, বরং একে পাপের সর্বোচ্চ পর্যায়ে গণ্য করা হয়েছে। তাই মুসলিম হিসেবে আমাদের উচিত—সুদমুক্ত জীবন যাপন করা, সুদভিত্তিক কোনো লেনদেন থেকে বিরত থাকা এবং সমাজকে এই ভয়াবহ অভিশাপ থেকে রক্ষা করা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হালাল উপার্জনের পথ সহজ করুন এবং সুদের মতো হারাম থেকে বাঁচার তাওফিক দান করুন।