মায়ানমারে বরখাস্ত ২৪ ,নতুন মন্ত্রী নিয়োগ ১১


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারি ২, ২০২১, ৮:২২ অপরাহ্ণ /
মায়ানমারে বরখাস্ত ২৪ ,নতুন মন্ত্রী নিয়োগ ১১

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর এবার সু চি সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে অপসারণ করে নতুন করে ১১ জনকে মন্ত্রীত্ব দেয়া হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী পরিচালিত মায়াবতী টেলিভিশনে সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পর এই ঘোষণা দেওয়া হয়। নতুন করে মন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অর্থ, স্বাস্থ্য, তথ্য, পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, সীমান্ত ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। বরখাস্ত হওয়ার আগে সু চি’র স্বাস্থ্যমন্ত্রী অবশ্য পদত্যাগ করেছিলেন।

উল্লেখ্য, সোমবার ভোরে দেশটির সেনাবাহিনী মিয়ানমারের নেত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি ও তার ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে আকস্মিকভাবে আটক করে। ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারে এক বছরের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছেন সেনা সমর্থিত মিন্ট সোয়ে। তবে আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের ক্ষমতা নিয়েছেন সেনাপ্রধান মিং অং হ্লাইং।

অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারের রাজধানী নাইপিদো পার্লামেন্টের সদস্যদের বাসভবনের বাইরে পাহারা দিচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। সেনা অভ্যুত্থানের এ ঘটনায় দেশটিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ করে দেওয়া হয় ব্যাংক। খাদ্যের দোকানগুলোয় মানুষের ভিড় বাড়ছে। রাস্তায় নামানো হয়েছে পুলিশ। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। তারা বলছে, সামরিক শাসন শেষে সুষ্ঠু নির্বাচনের পর বিজয়ীদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হবে।

গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সু চির দল দ্য ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি জয়ী হয়। তবে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সংকটের শুরুটা মূলত এখান থেকেই। ২০১৭ সালে দেশটির সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর গণহত্যা নিয়ে সু চি কার্যত দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষেই ছিলেন। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি।

গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে। ২০১৫ সালের তুলনায়ও সে বছর সু চির দল বেশি ভোটে জয়ী হয়। এরপর সু চি ক্ষমতায় আসেন। এ নির্বাচন নিয়ে সেনাবাহিনীর অভিযোগ, ভোটে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। সেনাবাহিনীর দাবি, ভোটে কারচুপির এক কোটির বেশি ঘটনার প্রমাণ রয়েছে তাদের কাছে। যাচাই–বাছাইয়ের জন্য সেনাবাহিনী সরকার পরিচালিত নির্বাচন কমিশনের কাছে ভোটার তালিকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

কিছুদিন আগে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং এক বক্তব্যে মিয়ানমারের সংবিধান বাতিল করার হুঁশিয়ারি দেন। এরপরই উত্তেজনা চরমে ওঠে। গত সপ্তাহে ইয়াঙ্গুনের বাণিজ্যিক এলাকার রাস্তায়, রাজধানী নাইপিদো ও অন্যান্য এলাকায় সেনাবাহিনীর ট্যাংক মোতায়েন করা হয়। নির্বাচনের ফল নিয়ে সেনা–সমর্থকরা বিক্ষোভ করেন। এসবেরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটল।

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com