মিঠাপুকুরে অভাবের তাড়নায় প্রতিবন্ধীর গলা কেটে আত্মহননের চেষ্টা


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১৫, ২০২৪, ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ /
মিঠাপুকুরে অভাবের তাড়নায় প্রতিবন্ধীর গলা কেটে আত্মহননের চেষ্টা
মোঃ সুলতান মারজান (হৃদয়) রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরের মিঠাপুকুরে দীর্ঘদিন থেকে অভাব, অনাটন এবং পারিবারিক বঞ্চনার শিকার হয়ে এক শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্লেড দিয়ে নিজের গলা নিজে কেটে আত্মহননের চেষ্টা করেছেন। আশংকাজনক অবস্থায় ওই প্রতিবন্ধী যুবককে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটে এখন পর্যন্ত তার উন্নত চিকিৎসা গ্রহন করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালে থাকা স্বজনরা।
প্রতিবেশীরা জানান, মিঠাপুকুর উপজেলার ০২ নং রানীপুকুর ইউনিয়নের দৌলত রসুল গ্রামের দিনমজুর আব্দুল আজিজের পুত্র মোঃ রবিউল ইসলাম (৩৮) জন্মগত ভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। কোমরের নিচের অংশ থেকে তার দুটি পা অচল। রবিউলের পিতা মাতা নিজেরা-ও- বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। নানাবিধ রোগশোকে তারা নিজেরাই চলাচলে অক্ষম। প্রতিবন্ধী রবিউল মানুষের সেবা ছাড়া চলতে পারেননা। অন্যদিকে শারীরিক জটিলতায় তাঁকে নানাবিধ চিকিৎসাসেবা গ্রহন করতে হয়।
সোমবার (১৫-এপ্রিল) প্রতিবন্ধী রবিউল ইসলামের রোগ বেড়ে যাওয়ায় এবং পারিবারিক অভাব অনাটনে নিজেকে পরিবারের বোঝা মনে করে ব্লেড দিয়ে নিজের গলা নিজে কাটার চেষ্টা করেন। এতে তাকে বাঁচাতে পরিবার সহ প্রতিবেশীরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সে জানায়, তাকে কেউ বাঁচাতে আসলে নিজের গলা কেটে ফেলে আত্মহনন করবে। পরে ভঁয়ে আর কেউ তার কাছে যায়নি। দুর থেকে বুঝিয়ে তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।
কিন্তু মঙ্গলবার (১৬-এপ্রিল) বিকালে রবিউল পূর্বের দিনের কাঁটা ক্ষতস্থানে আবারো ব্লেড দিয়ে আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে নিজের গলা নিজে কাটেন। এতে তার শ্বাসনালীর বাহিরে অনেকাংশে কেটে যায়। এসময় রক্তাত্ত অবস্থায় তার প্রতিবেশী ভাগিনা রাজু আহম্মেদ এবং গ্রাম পুলিশ সদস্য তাঁকে উদ্ধার করে ভ্যানযোগে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রবিউলকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন। এসময় টাকার অভাবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করাতে প্রায় চারঘন্টা বিলম্বিত হয়। সঙ্গে থাকা ভাগিনা রাজু আহম্মেদ জানান, বাড়িতে এসে প্রতিবেশীদের কাছে চাঁদা তুলে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। কিন্তু রোগীর কাছে অবস্থান করার মতো কেউ নেই। এখনো অনেক চিকিৎসা দরকার। প্রতিবন্ধীরা যে অসহায় তা বুঝতে পারলাম। এসময় তিনি সমাজের দানশীল ব্যক্তি সহ সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
এ বিষয়ে রানীপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান- আবু ফরহাদ পুটু বলেন, গ্রাম পুলিশের কাছ থেকে বিষয়টি জেনেছি। দেখি কতদূর কি করা যায়।
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com