ভিয়া ভাউচারে ডিপো ম্যানেজারের কোটি টাকা আত্বসাৎ


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১৪, ২০২৩, ২:২২ পূর্বাহ্ণ /
ভিয়া ভাউচারে ডিপো ম্যানেজারের কোটি টাকা আত্বসাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক:  ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্পোরেশন (বিআরটিসি) এর কল্যাণপুর বাস ডিপোর সাবেক ম্যানেজার নুর-ই-আলমের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। বিআরটিসির চেয়ারম্যানের নিকট রেকর্ডপত্র চেয়ে গত ৩১ শে অক্টোবর এক পত্র লিখেন দুদকের সিলেট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল। দুদকের পত্র থেকে জানা যায়, নুর-ই-আলম সিলেট বাস ডিপোতে থাকাকালীন সিলেট বাস ডিপোর ৬টি অশোখ লিল্যান্ড বাস পরিচালনার ৩ কোটি ৯ লক্ষ ৫৩ হাজার ৪২৫ টাকা টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এর আগে গত ৮ নভেম্বর বিআরটিসির চেয়ারম্যানের নিকট কল্যাণপুর বাস ডিপোর সাবেক ম্যানেজার নুর-ই-আলমের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিচার চেয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন কল্যাণপুর ডিপোর ওসমান গনি নামে এক ড্রাইভার। লিখিত অভিযোগে জানা যায়, নুর-ই-আলম সিলেট বাস ডিপোতে কর্মরত থাকা অবস্থায় টায়ার না কিনে ৩৬ টি নতুন টায়ারের ভুয়া ভাউচার বানায়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ৪ টি সচল কোরিয়ান বাস অচল করে ডিপোতে ফেলে রাখেন, এতে করে কর্পোরেশনের ৫০ লক্ষাধিক টাকা আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। সিলেট ডিপোতে তার আপন ছোট ভাই মাসুদ এবং বাহিরের অন্য ব্যক্তির নামে গাড়ী পরিচালনা করে ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এখনও পর্যন্ত ম্যানেজার নুরে আলমের দাপটে তার আপন ছোট ভাই মাসুদ ৩০০ ফিট রুটে বাস পরিচালনার সাথে জড়িত আছে। কল্যাণপুর বাস ডিপোতে কর্মরত থাকা অবস্থায় কারিগরি প্রধান জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে ভুয়া ভাউচার করে কর্পোরেশনের ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

কল্যাণপুর ডিপোর পাম্প থেকে জ্বালানী চুরি করে লক্ষ লক্ষ টাকা অত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া ও ষ্টাফ বাসের জ্বালানী ডিপো থেকে না নিয়ে বাহিরের পাম্প থেকে নিয়ে মাসে ২০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। কল্যাণপুর বাস ডিপোতে কর্মরত থাকা অবস্থায় কর্র্র্র্র্র্র্র্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে ঢাকা মেট্রো-চ-৭৩৬০ নম্বরের একটি লং লীজের বাস বিক্রয় করেছেন। তিতাসে যে সকল ষ্টাফ বাস পরিচালিত আছে সেসব বাসের কাজ না করায় প্রায় সময় বাস গুলো নষ্ট হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতো। যার ফলে তিতাসের সাথে বিআরটিসির চুক্তি বাতিল হওয়ার মত অবস্থা হয়েছিল। কল্যাণপুর বাস ডিপোতে কর্মরত থাকা অবস্থায় চায়না বাসের নতুন মালামাল কেনার জন্য প্রধান কার্যালয় থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে নতুন মালামাল না কিনে পুরাতন অল্প কিছু মালামাল কিনে ভুয়া ভাউচার বানিয়ে সমন্ত টাকা আত্মসাৎ করেন। সিলেট বাস ডিপোতে কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজ নামে বাস পরিচালনা করে ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা রাজন্ব গোপন রাখে। লাল সবুজ পরিবহন নামে তার নিজন্ব ২ টি বাস রয়েছে এবং তিনি বাসের ব্যবসাও করেন।

ম্যানেজার নুর-ই-আলম জোয়াসাহারা বাস ডিপোতে কর্মরত থাকা অবস্থায় শ্রমিক কর্মচারীদেরকে উসকানি দিয়ে চেয়ারম্যান ফরিদ আহম্মেদ ভূইয়া এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলে। সংস্থাটির পরিচালক হামিদ এর মাধ্যমে ৩০ লক্ষে টাকা দিয়ে অবৈধভাবে পদোন্নতি নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ম্যানেজার নুর-ই-আলম বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে ১৫ থেকে ২০ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন এবং এই কাজের সাথে জড়িত ছিল কল্যাণপুর বাস ডিপার টিআই নাদিম।

এছাড়াও অভিযুক্ত নুর-ই-আলম চৎবসরড়২১ মডেলের একটি প্রাইভেট কার কিনেছেন এবং ব্যবহার করে আসছেন। কল্যাণপুর এবং মোহাম্মদপুরে তার ২ টি ফ্লাট রয়েছে। গ্রামের বাড়িতে তার শ্বশুর এবং ভাগিনার নামে ২৭ বিঘা জমি কিনেছেন। তার শশুরের চেয়ারম্যান নির্বাচনের সময়ে বিআরটিসি থেকে দুর্নীতি করে ১ কোটি টাকা খরচ করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্পোরেশন (বিআরটিসি) এর চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত নুর-ই-আলমের বিষয়ে প্রাপ্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি দুদকের চাওয়া প্রতিবেদনও শীঘ্রই প্রেরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com