নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যা দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত


অনলাইন ডেস্ক প্রকাশের সময় : মার্চ ২৬, ২০২৪, ৪:১৪ অপরাহ্ণ /
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যা দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: 
যথাযথ মর্যাদা ও কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৪তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আলোক সজ্জা, প্রদীপ প্রজ্বলন, আলোচনা সভাসহ দুই দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
২৫ মার্চ কালরাত স্মরণে সোমবার (২৫ মার্চ) রাত ১১ টায় ক্যাম্পাসে ব্ল্যাকআউট করা হয়। ফলে জাতীয় কর্মসূচির সাথে সংগতি রেখে এক মিনিট বিদ্যুতবিহীন গোটা ক্যাম্পাস অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে।
এরপর রাত সোয়া ১১টায় প্রথমে ক্যাম্পাসের বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ও পরে ‘চির উন্নত মম শির’ প্রাঙ্গণে প্রদীপ প্রজ্বলন করা হয়।
প্রদীপ প্রজ্বলন শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানীরা যে গণহত্যা করেছিল সে কাজটি ইতিহাসের জঘন্যতম কাজ। জঘন্যতম এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এখনো আমরা পাইনি। আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই-এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে হবে। একই সঙ্গে এই গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। গণহত্যার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের বিচার আন্তর্জাতিকভাবে করতে হবে। এটাই সময়ের গণদাবি।
দিবসটি উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় সঙ্গীত সহযোগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যে গিয়ে জমায়েত হয়। পরে শহিদদের স্মরণে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীরসহ অন্যরা ধারাবাহিকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, দপ্তর প্রধান, হল প্রভোস্টগণ, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলসহ পেশাজীবি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে পায়রা অবমুক্ত করা হয়। এরপরে শোভাযাত্রাটি বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য থেকে ক্যাম্পাসের ‘চির উন্নত মম শির’ প্রাঙ্গণে গিয়ে জমায়েত হয়। এখানেও সকলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানায় একাত্তরের বীর শহিদদের প্রতি।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য, বায়ান্ন রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে শহিদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের স্মরণ করেন।
স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিক ইতিহাস তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, স্বাধীনতা দিবস একটি দিবস মাত্র নয়। এই দিবসের সাথে আমাদের মুক্তির ও চেতনার ব্যাপারটি যুক্ত রয়েছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুধু ১৯৭১ সালটির উপর নির্ভরশীল নয়। বাঙালির যে স্বাধীনতার স্পৃহা সেটি বহু বছর পুরোনো। বাঙালি যখন পরাধীন হয়ে যায়। একটি বৃহৎ পরিমন্ডলের অংশ হিসেবে বাঙালি যখন পরাধীনতার গ্লানি অনুভব করে তখন স্বাধীনতার জন্য আকুতি প্রকাশ করে।
আয়োজক কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুশাররাত শবনম, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার। আলোচনা করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. শফিকুল ইসলাম, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি মো. মোকারেরম হোসেন মাসুম, ডিরেক্ট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফাহাদুজ্জামান মো. শিবলী, কর্মচারী সমিতি (গ্রেড ১১-১৬) সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম, কর্মচারী ইউনিয়ন ( গ্রেড ১৭-২০) সভাপতি রেজাউল করিম রানাসহ অন্যরা। স্বাগত বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আয়োজক কমিটির সদস্য-সচিব কল্যানাংশু নাহা। সঞ্চালনা করেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল নাঈম ও সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুদুর রহমান।
অনুষ্ঠান শেষে জাতীয় শিশু দিবসের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও স্বাধীনতা দিবসের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়।
আলোচনা সভা শেষে শেখ রাসেল কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ গ্রহণ করেন।
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com