প্রকৃতি শীতের আগমনী জানান দিতে শুরু করেছে কার্তিক মাসের শুরু থেকেই। শহরে এর প্রভাব বোঝা না গেলেও গ্রামাঅঞ্চলে সন্ধা হলেই শীত অনুভূতি, কোয়াশা সবই দেখা মিলছে। কার্তিকের শেষ ভাগে অগ্রহায়ন শুরুতেই শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করছে। শীত শুরু হতেই গ্রামীন জনপদের মাঠে ময়দানে, রাস্তাঘাটে খেজুর গাছে দেখা মেলে গাছির। একজন গাছি খেজুর গাছকে সুন্দর করে পরিস্কার করে গাছের বুক চিরে রস বের করে।সুস্বাদু এই রসের চাহিদা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচেতে। শীত যত বাড়ে খেজুর রসের চাহিদাও ততো বাড়ে। আবহমান কাল থেকে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে খেজুর রস দিয়ে তৈরী হয় নানা ধরনের পিঠা পায়েস।
বর্তমানে শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ভ্রাম্যমান টোং দোকান দিয়ে শহরের যান্ত্রিক ইট পাথরের মানুষকে কিছুটা শীত মৌসুমের পিঠার স্বাদ দিচ্ছে ব্যবসায়ী। মিষ্টি শীতের শুরুতেই কুয়াশা উপেক্ষা করে খেজুরের রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছে কুষ্টিয়ার গাছিরা। শহরের ১৭ নং ওয়ার্ডের ফুলবাড়িয়া গ্রামে কুষ্টিয়া বাইপাস সড়কের পাশে ও বটতৈল গ্রামে আছে প্রচুর খেজুর গাছ। এখানে রাজশাহী থেকে গাছিরা এসে রস সংগ্রহ করেন। এছাড়া মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলা এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার অন্তর্গত গ্রামগুলোতে প্রচুর খেজুর গাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকে সুস্বাদু রস সংগ্রহ করে আগুনে জ্বাল দিয়ে তৈরী করা হয় বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি (ঝোলা) গুড়।
শীত মৌসুমের রস সংগ্রহের এই সময়টাতে কাজের চাপে দম ফেলার সময় নেই গাছিদের। কুষ্টিয়া শহরে খেজুর রসের আছে ব্যাপক চাহিদা। এক গ্লাস রস ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হয়। শুধু রস বিক্রি করে অনেকেই আর্থিক ভাবে লাভোবান হচ্ছে গাছি। খেজুর গাছের বুক চিরে সাদা অংশ বেরকরে একটি পাইপ লাগিয়ে মাটির পাত্র (কলসি) বেঁধে সকাল ও সন্ধায় রস সংগ্রহ করা হয়।
ডাঃ পলাশ আহমেদ জানান, খেজুর রস সুস্বাদু ও উপকারী পানীয়। তবে ঐতিহ্যের ধারক এই খেজুর রসের মাধ্যমে বর্তমানে নিভা ভাইরাস নামক একটু রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। নিপা ভাইরাস মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। তবে অন্তত ৭০-৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটিয়ে খেতে পারলে নিপা ভাইরাস ছড়ানোর আশংকা অনেকাংশে কম থাকে। তাই নিজের কথা চিন্তা করে সবাই কে খেজুর ও তালের রস ফুটিয়ে খাওয়া উচিত।
আপনার মতামত লিখুন :